অন্ধ গলির শেষ দেয়ালটা ভেঙে দিলেই সমাধান

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে জুনায়েদ আহমেদ পলক আছেন আগের দায়িত্বেই। দুটি বিভাগ মিলে যে মন্ত্রনালয় তার মন্ত্রী হয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার।

এই রদবদল সম্পর্কে নবনিযুক্ত মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি বিভাগের মধ্যে ঘুণে ধরা একটি সম্পর্ক ছিল বলেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন একটি দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে যিনি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি এখন নেই। কেন তিনি নেই জানি। কিন্তু এখানে বলা যাবে না।’

মোস্তাফা জব্বার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ধরনের কোনও সমস্যা আর থাকবে না। অন্ধ গলির শেষ দেয়ালটা ভেঙে দিলেই সমাধান মিলবে।
বুধবার ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মোস্তাফা জব্বার সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসিসের মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে প্রায় এক ঘন্টা বক্তব্যে নবনিযুক্ত এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি সচিবালয়ে বসবো। তবে বেশিরভাগ সময় কাটাবো আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারের আইসিটি বিভাগে।’

তিনি বলেন, ‘টেলিকম বিভাগে অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক জটিলতার মধ্যে রয়েছে খাতটি। এটিকে টেনে তুলতে হবে। ফলে সেখানেও সময় দিতে হলেও আইসিটি বিভাগে আমার সময় কাটবে। আইসিটি বিভাগে সবাই সহজে আমার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবে, সচিবালয়ে যা নেই। আমি সুযোগটি কাজে লাগাতে চাই।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এখনও ইন্টারনেটের দাম বেঁধে দিতে পারলো না। এটা তাদের ব্যর্থতা। এখনও ইন্টারনেটের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে নেই। তাই আমি আমার প্রথম কাজ হলো ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে আনা। এজন্য যা যা করার দরকার আমি তাই করবো’।

তিনি বলেন, ‘শিগগিরই আমি বিটিআরসির সঙ্গে বসবো। তাদের সমস্যাটা কোথায় সেটা শুনতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উদ্যোগ নেবো। এতদিন আমি ইন্টারনেটের দাম কমানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি করে আসছিলাম। এবার এই দাবি বাস্তবায়ন করা আমার দায়িত্ব।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি এই দুইটি খাতকে সঠিক পথে আনতে করণীয় কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘একজন ডাক্তার যখন রোগীর রোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানেন এবং এর চিকিৎসাও জানেন তখন রোগ সারানো সময়ের ব্যাপার মাত্র। অন্ধ গলির শেষ দেয়ালটা ভেঙে দিলেই সমাধান মিলবে। আমি গত ৩০ বছর ধরে এই খাতে কাজ করছি। আমি জানি কোথায় সমস্যা? সমাধানটাও আমার জানা আছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমার হাতে সময় কম। মাত্র একটি বছর। আমাকে হেলে দুলে কাজ করলে চলবে না। আমার যা করার তা এই এক বছরেরই করতে হবে। এজন্য আপনারা আমাদের জানান কী কী করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নিজের প্রথম কার্যদিবসে আইসিটি বিভাগেই অফিস করবেন বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের প্রথম সভাপতি এ তৌহিদ, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, এসএম কামাল, হাবিবুল্লাহ এন করিম, সারওয়ার আলম, রফিকুল ইসলাম রাওলি, মাহবুব জামান, একেএম ফাহিম মাসরুর, শামীম আহসান প্রমুখ।

মঙ্গলবার শফৎ গ্রহনের পর বুধবার মোস্তফা জব্বারকে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজকের বাজার: এনএল/ওএফ/ ৩ জানুয়ারি ২০১৮