অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন অভিজিৎ ও তার স্ত্রীসহ ৩ জন

বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতির সফল উপস্থাপনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন আরেক বাঙালি অভিজিৎ ব্যানার্জি। অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারের এই সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি। তার সঙ্গে যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন তার স্ত্রী এস্থার ডাফলোও এবং মাইকেল ক্রেমার।

অর্থনীতিতে এবারের নোবেল পাওয়া এই তিন অর্থনীতিবিদের পরিচালিত গবেষণা বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনের লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার রাখছে। তাদের পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতি প্রয়োগ করে মাত্র দুই দশকে উন্নয়ন অর্থনীতি রূপান্তরিত হয়ে গেছে। বর্তমানে এই উন্নয়ন অর্থনীতিই হয়ে গেছে গবেষণার এক সমৃদ্ধ ক্ষেত্র।

বিশ্বের ৭০ কোটির বেশি মানুষ এখনো অত্যন্ত নিম্ন আয়ে জীবন ধারণ করছে। এখনো প্রতি বছর পঞ্চম জন্মদিন আসার আগেই মৃত্যু হয় অর্ধকোটি শিশুর। এদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু এমন রোগে হয় যার চিকিৎসা বা প্রতিরোধ সম্ভব ছিল চিকিৎসার খরচ আর কিছুটা কম হলেই।

এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা তাদের গবেষণার মধ্য দিয়ে তথ্য সংগ্রহের নতুন এক ধরনের পদ্ধতি বের করেছেন, যার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়ার সবচেয়ে ভালো উপায় কী হতে পারে তার নির্ভরযোগ্য উত্তর পাওয়া সম্ভব।

এ পদ্ধতিতে বৈশ্বিক দারিদ্র্যের মতো বড় ইস্যুটিকে ছোট ছোট গোছানো সম্ভব এমন প্রশ্নে বিভক্ত করা হয়। যেমন, শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে সবচেয়ে কার্যকর প্রক্রিয়া কী।

১৯৯০’র দশকে মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার ও তার সহকর্মীরা গবেষণার মধ্য দিয়ে দেখালেন পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতি ঠিক কতটা শক্তিশালী হতে পারে। তারা কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো করতে মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু প্রক্রিয়ার পরীক্ষা চালিয়ে এর সত্যতা প্রমাণ করেন।

ভারতীয় বাঙালি অভিজিৎ ব্যানার্জি এবং তার স্ত্রী ফ্রান্সের এসটার ডুফলো মিলে অন্য বিভিন্ন দেশে অন্যান্য বিষয়ের ওপরও এমনই কিছু মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষানির্ভর গবেষণা করে সফল হন। এসব গবেষণার অনেকগুলোই তারা করেছেন ক্রেমারের সঙ্গে মিলে।

এই তিন জনের পরীক্ষানির্ভর গবেষণা পদ্ধতি বর্তমানে উন্নয়ন অর্থনীতিতে পুরোপুরিভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আছে।

আজকের বাজার/এমএইচ