আগামীকাল থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মৎস্য শিকার শুরু হচ্ছে

জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামী কাল থেকে পুুনরায় মৎস্য শিকার শুরু হচ্ছে। শুক্রবার রাত ১২ টার পর থেকে জেলেরা নদীতে নামার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। জাল, ট্রলার, নৌকা প্রস্তুত রয়েছে। তারা প্রত্যাশা করছেন নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছের আধিক্য বৃদ্ধি পাবে। আসন্ন ঈদ উল ফিতর পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দের সাথে উদযাপন করতে পারবেন।
১ মার্চ থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার এলাকার অভায়শ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ। মূলত এ সময়টা মাছের ডিম দেয়ার মৌসুম। তাই ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়া নির্বিঘœ করতেই সরকারের এ উদ্যোগ। কাল রাত ১২টার পর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। নতুন উদ্যেমে মৎস্য শিকারের অপেক্ষায় উপক’লের লাখো জেলে।
এদিকে গত বছর অভায়শ্রমে সফলভাবে অভিযান সম্পন্ন হওয়াতে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে ইলিশ উৎপাদন হয়েছিলো। আর চলতি বছর ১ লাখ ৭৫ হাজার মে:টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর চেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে বলে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ আশা করছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: এস এম আজাহারুল ইসলাম বাসস’কে জানান, মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এ বছর অভায়শ্রমে সফলভাবে পালিত হয়েছে মৎস্য শিকারের নিষেধাজ্ঞা। আইন অমান্য করায় ১৬৪ জেলের বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড দেয়া হয়েছে ও ৩৫০ জনকে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া আটক ট্রলারের নিলাম থেকে আয় হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এ সময়ে জব্দ করা হয়েছে ইলিশসহ প্রায় ১০ টন মাছ। যা অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম বাসস’কে বলেন, জেলার নিবন্ধিতসহ প্রায় ৪ লাখ জেলে বর্তমানে নদীতে মৎস্য শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দীর্ঘ ২ মাস আইনের প্রতি শ্রদ্ধা করে জেলেরা নদীতে নামেনি। অধিকাংশ জেলেই ধার-দেনা করে নদীতে জাল ফেলবেন। আশা করছেন প্রচুর মাছ পাবেন তারা। অভাব দূর হবে জেলে পল্লীতে।
সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জেলে আইজউদ্দিন, হারেস, জাবেদ ও বারেক বলেন, সরকারের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কারণ অভায়শ্রমে অভিযান হলে নদীতে মাছ বাড়ে। আমরা যারা মাছ ধরে জীবন কাটাই তারাই সবচে বেশি লাভবান হই। এবছরও আশা করছেন নদীতে প্রচুর মাছ পাবেন।
অন্যদিকে দীর্ঘ বিরতির পর মৎস্য আড়ৎগুলোতেও ব্যস্ততা ছিলো চোখে পড়ার মত। ছুটিতে যাওয়া শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। ২ মাস বন্ধ থাকার পর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে কাঠের বাক্সগুলো। এখন শুধু অপেক্ষা মাছের জন্য।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরো বলেন, এবছর অভিযানে জেলেদের পাশাপাশি জনসাধারণের সচেতনতা ছিলো বেশি। জেলেদের মধ্যেও আইন মানার প্রবণতা বাড়ছে।