আরো সহায়তা প্রদানের জন্য উন্নয়ন সহযোগিদের প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর আহবান

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম আজ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আরো সহায়তা প্রদানের জন্য উন্নয়ন সহযোগিদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের অভিজ্ঞতা প্রশংসনীয়। আমাদের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আরো সহায়তা প্রদান এবং উন্নয়ন সহযোগিদের আগামী দিনগুলোতেও আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ করছি।’

বুধবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ)-২০২০ এর একটি কর্মঅধিবেশনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর অংশীজন: অভীষ্ট টেকসই উন্নয়ন অর্জন’বিষয়ক কর্মঅধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রি পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তেরিং, যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ডিএফআইডির ঢাকায় আবাসিক প্রধান জুডিথ হারবার্টসন ও ব্র্যাক গ্লোবাল বোর্ডের চেয়ার আমেরা হক বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম।

তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের উন্নয়ন বেগবান করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বপ্ন পূরণের জন্য সরকার ও উন্নয়ন সহযোগিসহ সকল পর্যায়ের স্টেক হোল্ডারদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন আমরা এটা নিয়ে বড় ধরনের চাপে রয়েছি।’

তিনি বলেন, বিশ্ববাসীকে মিয়ানমার সরকারের ওপর আরো বেশি চাপ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। খুব শীঘ্রই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শেষ হবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে এমনভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে, যাতে কৃষিখাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের সর্বত্র বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম তার মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের জাতীয় সঞ্চয় জিডিপির ৩৬ দশমিক ২ শতাংশে নিয়ে যেতে চায়। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ২৮ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

তিনি বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার দু’টি বিষয় হচ্ছে সমৃদ্ধির প্রসার এবং অন্তর্ভূক্তি বাড়ানো। পরিকল্পনার আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য সীমার হার ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং অতি দারিদ্রতা ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশে নিয়ে আসা হবে। তিনি জানান, রূপকল্প-২০৪১ প্রণয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দ্বিতীয়‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা,২০২১-২০৪১’শীর্ষক পরিকল্পনা দলিলের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তেরিং বলেন, এখনও বাংলাদেশের কর-জিডিপির হার সর্বনিন্ম পর্যায়ে রয়ে গেছে। তিনি অধিক সংখ্যক ইউরোপীয় কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন। ডিএফআইডি আবাসিক প্রধান জুডিথ হারবার্টসন দেশে কর-জিডিপির হার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বুধবার থেকে দু’দিনব্যাপি বিডিএফ-২০২০ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে এর উদ্বোধন করেন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান