ইতিহাস বিকৃতিকারিরা এক ধরনের দুস্কৃতিকারী : তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটায়, তারা ইতিহাসের পাতায় এক ধরণের দুস্কৃতিকারী।
স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিএনপিসহ যে সকল রাজনৈতিক দল এই ভুলগুলো করেছে, তারা সেই ভুল থেকে বের হয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাহলে দেশের মানুষ তাদেরকে সাধুবাদ জানাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, তারা স্বাধীরতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছরে সত্যটাকে মেনে নিবেন, ইতিহাস মেনে নিবেন। কিন্তু তারা জন্মলগ্ন থেকে কয়েক দশক ধরে যে ইতিহাস বিকৃতি করে আসছেন, ৭ মার্চ পালন করতে গিয়েও সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নাই।
হাছান মাহমুদ আজ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সী-বীচে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আয়োজিত সিটি আউটার রিং রোডে সাইকেল লেইন’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, বোর্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, কে.বি.এম শাহজাহান, জসিম উদ্দিন শাহ, এম আর আজিম, রোমানা নাছরিন, সচিব আনোয়ার পাশা প্রমূখ।
ড. হাছান বলেন, কদিন আগে আমরা ৭ মার্চ উদযাপন করেছি, যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম,” পরেরদিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সদর দপ্তরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল এভাবে, চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিলেন। আমাদের চেয়ে চেয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিলনা। তাকে আবার সেজন্য অভিযুক্তও করা যাচ্ছেনা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, জনগণ বুঝতে পেরেছিল কি করতে হবে। তখন সবাই মাঠে নেমে পড়েছিলেন “বাঁশের লাঠি তৈরী কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর” শ্লোগানে। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেটা বুঝতে পারে নাই, বুঝলেও অভিযুক্ত করতে পারে নাই। এখন দেখলাম ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে বিএনপি যে বক্তব্য দিল, পাকিস্তানিরা যেমন বুঝতে পারে নাই, তেমনি বিএনপিও বুঝতে পারে নাই। পাকিস্তানিদের বুঝের সাথে বিএনপির বুঝের খুব মিল রয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, আজ থেকে কয়েক বছর আগে মানুষ ধারণা করেনি পতেঙ্গা সৈকতে এমন একটি সী-বীচ হবে। এটি যখন প্রথম উম্মুক্ত করা হয়েছিল, সবাইকে অবাক করেছিল। একেবারে দুবাই সী-বিচের আদলে এত সুন্দর করে এটাকে সাজানো হয়েছে।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা সী-বীচ আগেও ছিল, পৃথিবীর পরিবর্তনের সাথে সাথে সেটির আধুনিকায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, যেটি বহুবছর হয়নি, বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে সিডিএ’র মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে সী-বীচের সৌন্দর্যমন্ডিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’র দৃষ্টি আকর্ষণ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সী-বীচের অন্যতম আকর্ষণ ও উপাদান হচ্ছে বালুচর। এখানে আগে যে পরিমাণ বালুচর ছিল সেটা হারিয়ে গেছে। বীচ বলতে বালুচরকেই বুঝায়, দুবাই সী বীচে প্রথমে বালি ছিলনা, পরে বাইরের খেকে বালি এনে সেখানে বালুচর বানানো হয়েছে। প্রয়োজনে বাইরের থেকে বালি এনে এখানেও বালুচর করতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথম থেকেই সিডিএ’র কাছে নিবেদন ছিল এখানে একটা সাইকেল লেইন রাখার। আমি বিদেশে পড়ালেখা কালে সাইকেল চালিয়ে ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করতাম। আমাদের শহরগুলোতেও এধরণের সাইকেল লেইন করতে পারলে ভালো হতো। চট্টগ্রাম শহরের দুয়েকটি রাস্তায় সাইকেল লেইন করার জন্য সিডিএকে অনুরোধ জানান তিনি।