ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নেই যানজট: যাত্রীদের স্বাগত জানাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহসড়কের দিয়ে যাতায়কারী লাখ-লাখ যাত্রী বাড়ি ফিরছেন। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক নেই কোন যানজট। রাজধানী ঢাকা থেকে বেরিয়ে মহাসড়কের ভবেবরচর পৌঁছবেন তখনই ঈদযাত্রায় স্বাগত জানাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। গ্রীষ্মের এ সময়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে চোখে পড়বে সারিবদ্ধ রাঁধাচূড়া গাছে ফুলের মেলা। শুধু রাঁধাচূড়া নয়- হৈমন্তী, কুর্চি, টগর, কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য মনোরম প্রাকৃতিক করে তুলেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে। বাস কিংবা মাইক্রোর জানালা দিয়ে বাইরে চোখ পড়তে নিমেষেই যে কারও মনে প্রশান্তি চলে আসবে।

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার সড়ক সেজেছে প্রকৃতির অপরূপ সাজে। এবার ঈদযাত্রায় স্বাগত জানাবে সারি সারি এসব ফুটন্ত ফুল। এ সড়কে পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানের যানবাহনে আসা যাত্রীদের যেন স্বস্তি এনে দেবে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি ও সাদা ফুলগুলো। এই মহাসড়কে যাত্রপথে কেউ গাড়ীর জানালা দিয়ে আবার কেউ ব্যক্তিগত গাড়ী থামিয়ে মুঠোফোন দিয়ে ক্যামেরাবন্দি করছেন। স্বল্প সময়ের এ যাত্রাপথে প্রাকৃতিক লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি ও সাদা ফুলগুলো দেখে যাত্রীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দিতে কথা হয় জনৈক আফরিন খন্দকারের সাথে। তিনি জানান, করোনার কারণে গত দুই বছর গ্রামের বাড়ি আসতে পারেনি। তাই বাবা-মাসহ এবার ঈদ করতে ঢাকা থেকে নোয়াখালী নিজ বাড়ি যাচ্ছেন তারা। যাত্রাপথে মহাসড়কের পাশে হৈমন্তী, কুর্চি, টগর, কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাই গাড়ি থামিয়ে ফুলগুলো দেখলাম। ছবি তুললাম। সত্যি এ সড়কের সৌন্দর্য্য আমাদের স্বস্তি দিয়েছে। গ্রীন লাইন পরিবহনের চালক মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে যাত্রীরা দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাবে। আমরা তো প্রতিনিয়ত এ সড়ক ব্যবহার করি। এবারের ঈদযাত্রীর সঙ্গে এ লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি ও সাদা ফুলগুলো আলাদা তৃপ্তি এনে দেবে বাসযাত্রীদের। যাত্রী মনির চৌধুরী বলেন, এই মহাসড়কে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদ যাত্রীরা বাড়ি যাচ্ছে। আমরা বাঙালি জাতি। সব সময় সৌন্দর্য্য প্রিয়। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দুই ধারের এ এই ফুটন্ত ফুলগুলো সত্যি ঈদ যাত্রীদের স্বাগত জানাবো।

সরেজমিন দেখা যায়, মহাসড়কের মধ্যে তিন ফুট উচ্চতার জারুল গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে আছে। দ্রুতগতিতে মহাসড়কে চলাচলরত ট্রাক, বাস ও কাভার্ডভ্যানের বাতাসে দুলছে জারুল ফুল। বৃষ্টিতে সতেজ হয়ে ওঠা গাছগুলো ফুলে ফুলে পরিপূর্ণ। মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত মহাসড়কের ডিভাইডারে জারুল ও হালকা গোলাপি কাঞ্চন ফুল আলো ছড়াচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বাসসকে বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে কোন রকম ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরবে যাত্রীরা। যাত্রা পথে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে ঈদযাত্রায় স্বাগত জানাবে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি ও সাদা রঙের রাধাচূড়া, হৈমন্তী, কুর্চি, টগর, কৃষ্ণচূড়া। এ বিষয়ে পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী বলেন, মহাসড়কের এই ফুল বাগান আমারও দৃষ্টি কেড়েছে। এটি পরিবেশের জন্য যেমন, তেমনি ভ্রমণের জন্যও খুব ভালো। প্রতিটি মহাসড়কে এভাবে পরিকল্পিত বাগান করে আমরা পরিবেশকে বাঁচাতে পারি। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান