‘উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে’

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ১৮ জন কৃষক ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার সার, বীজসহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস, কৃষকদের সহজশর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগসহ তাদের নগদ সহায়তা প্রদান, কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করেছে।’

আগামীকাল ১৯ এপ্রিল কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্যা, খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জেনোম সিকুয়েন্স উন্মোচন ও মেধাসত্ত্ব অর্জন করা হয়েছে। সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও বহুমুখীকরণ, বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ সংগঠন কৃষকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের দাবি আদায়সহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কৃষক লীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কৃষির উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। জাতির পিতা কৃষকদের কল্যাণে পঁচিশ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। তিনি উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিতে আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। খামার যান্ত্রিকীকরণের জন্য বর্তমানে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি জানান, প্রত্যেক কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষিসেবা সহজে পৌঁছে দেয়ার জন্য ‘কৃষি বাতায়ন’ তৈরি করা হয়েছে। দক্ষিণ অঞ্চলে ভাসমান বেডে চাষাবাদ পদ্ধতিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশের কৃষিখাতে সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কৃষক লীগের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে।
কৃষক লীগের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কৃষকের কণ্ঠ’ নামে স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ দেশের কৃষক সমাজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

কৃষক লীগের নেতা-কর্মীগণ কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নসহ দেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কৃষক লীগের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।