এন্ডারসনের নতুন চ্যালেঞ্জ ৭০০ উইকেট

সাউদাম্পটন টেস্টে গতকাল পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলীকে শিকার করে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টে ৬শ উইকেট পূর্ণ করেন ইংল্যান্ডের ডান-হাতি পেসার জেমস এন্ডারসন। বিশ্বের চতুর্থ বোলার হিসেবে ছয় শ ক্লাবের সদস্য হন তিনি। ৩৮ বছর ২৬ দিন বয়সে টেস্টে ৬শ উইকেট শিকারের ক্লাবে প্রবেশ বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতই। কিন্তু এখানেই ক্ষান্ত হতে চান না এন্ডারসন। তার লক্ষ্য টেস্টে ৭শ উইকেট। ৬শ উইকেট শিকার পূর্ণ করার দিনে এমন ঘোষনা দিলেন এন্ডারসন।

এন্ডারসনের লক্ষ্য পূরণের পথ দেখিয়েছে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ও বর্তমান অধিনায়ক জো রুট। বয়স বিবেচনায় না নিয়ে আগামী অ্যাশেজ পর্যন্ত এন্ডারসনকে খেলে যাবার অনুরোধ করেছে ইসিবি। তাতে সায় দিয়েছেন রুট।

ইনজুরির কারনে গত অ্যাশেজে পুরো সিরিজ খেলতে পারেননি এন্ডারসন। ২০১৯ সালের আগস্টে বার্মিংহামে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪ ওভার বল করে মাঠে বাইরে চলে যান তিনি। এরপর আর বোলিং বা ফিল্ডিংএ দেখা যায়নি তাকে।

ঐ ম্যাচের পর ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবারো মাঠে ফিরেন এন্ডারসন। কিন্তু ইনজুরির কারনে সিরিজে দু’টি টেস্টের বেশি খেলতে পারেননি।

এরপর ইনজুরি থেকে সুস্থ হতে পুনর্বাসন শুরু করেন এন্ডারসন। এরমধ্যেই করোনার কারনে স্তব্ধ হয়ে যায় ক্রিকেট। তারপরও মাঠে ফেরার জন্য নিজের ফিটনেস নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন এন্ডারসন। মাঠে ফিরতে মুখিয়ে ছিলেন তিনি।

১১৬ দিন পর গেল ৮ জুলাইয়ে আবারো ক্রিকেট ফিরলেও, মাঠে ফেরা হয় এন্ডারসনের। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে দু’টি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। এতে এন্ডারসনের খেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। শুরু হয় অবসরের গুঞ্জন।

কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে সব জল্পনা-কলপনাকে উড়িয়ে দিলেন এন্ডারসন। ৬শ উইকেট শিকারের পর আরও উপরে উঠার লক্ষ্য তার, ‘রুটের সাথে আমার আলোচনা হয়েছে। সে বলেছে, অস্ট্রেলিয়ায় আগামী অ্যাশেজে আমাকে দলে চায়। আমি অ্যাশেজে নিজেকে না থাকার কোনো কারণ দেখচ্ছি না। আমি নিজের ফিটনেস ও খেলার ব্যাপারে সবসময় সিরিয়াস এবং কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমরা লক্ষ্য আগামী অ্যাশজ পর্যন্ত খেলে যাওয়া।’

জিমি আরও বলেন, ‘আমি কি ৭শ উইকেটে শিকার করতে পারবো? আমার উত্তর হলো, কেন নয়? গত গ্রীষ্মে আমি যতটা বোলিং করতে চেয়েছিলাম, তা করতে পারিনি। তবে এই টেস্টে আমি নিজের ছন্দে ছিলাম। নিজের বোলিং দারুন উপভোগ করেছি। আমার মনে হয়, ইংল্যান্ডকে দেয়ার মত আমার এখনো অনেক কিছু বাকী আছে। এই আত্মবিশ্বাসই আমাকে আরও দেড়-দু’বছর খেলে যাবার সাহস দিচ্ছে। যতদিন এমন ভাবনা থাকবে ততদিন, আমি খেলে যাবো।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ হওয়া তিন টেস্টের পাঁচ ইনিংসে ১১ উইকেট শিকার করেছেন এন্ডারসন। ২০০৩ সালে লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে সাদা জার্সি গায়ে জড়ান এন্ডারসন। গেল ১৭ বছরের ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে ১৫৬ টেস্টে ৬শ উইকেট নিলেন তিনি।

ক্যারিয়ারে ইনিংসে ২৯বার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট ও ম্যাচে ৩বার ১০ উইকেট নিয়েছেন এন্ডারসন। দেশের মাটিতে ৮৯ টেস্টে ৩৮৪ উইকেট, বিদেশের মাটিতে ৬১ টেস্টে ১৯৪ উইকেট ও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ৬ টেস্টে ২২ উইকেট নিয়েছেন এন্ডারসন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান