করোনায় চট্টগ্রামে টানা দ্বিতীয় মৃত্যুশূন্য দিন

সংক্রমণের হার সামান্য বাড়লেও চট্টগ্রাম করোনাভাইরাসে আরো একটি মৃত্যুশূন্য দিন পার করেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৩ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আরোগ্যলাভ করেন ৪৭১ জন। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে করোনা সংক্রান্ত জেলার হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত রিপোর্টে এ সব তথ্য জানা যায়।

রিপোর্টে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এন্টিজেন টেস্টসহ পাঁচটি ল্যাবে গতকাল কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অবশিষ্ট আট ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৭১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ৬৩ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের ২৯ ও দশ উপজেলার ৩৪ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১৪, বাঁশখালীতে ৭, সীতাকুন্ড ও ফটিকছড়িতে ৩ জন করে, মিরসরাইয়ে ২ জন এবং রাউজান, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, পটিয়া ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ১ লাখ ১ হাজার ২৩৫ জন। এর মধ্যে শহরের ৭৩ হাজার ৩৫৭ ও গ্রামের ২৭ হাজার ৮৭৮ জন।

গতকাল করোনাভাইরাসের আক্রমণে নগরী ও গ্রামে কারো মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৭৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের ৭০৬ ও গ্রামের ৫৭৩ জন। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৭১ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ৭৫৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ হাজার ৩৭৮ জন এবং বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৭৫ হাজার ৩৭৯ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১২২ জন। ছাড়পত্র নিয়েছেন ১৮৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪১২ জন।

উল্লেখ্য, গতকালসহ পরপর দু’দিন জেলায় করোনায় কোনো রোগির মৃত্যু হয়নি। বৃহস্পতিবার মৃত্যুহীন দিনটি এসেছিল ৩ মাস পর। সংক্রমণ ও মৃত্যুতে ভয়ংকর হয়ে ওঠা জুলাই ও আগস্টের আগে ১৪ জুন চট্টগ্রাম করোনায় সর্বশেষ মৃত্যুশূন্য ছিল। ১৬ সেপ্টেম্বর ৪ মাসের সর্বনিম্ন ৪১ জনের সংক্রমণ ও আক্রান্তের হার সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম, ২ দশমিক ৭১ শতাংশ থাকলেও গতকাল কিছুটা বেড়েছে। তবে হার পাঁচের নিচে থাকাকে স্বাস্থ্য বিভাগ বরাবরই স্বস্তিদায়ক বলে আসছে।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এখানে ৭৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১২ ও গ্রামের ৭ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২১৬ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৯ জন ও গ্রামের ১৭ জন ভাইরাসবাহক হিসেবে চিহ্নিত হন।

বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৪১৮টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৩ ও গ্রামের ২টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৮৭টি নমুনায় শহরের ২টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৪৪টি নমুনার মধ্যে শহরের ৩ ও গ্রামের একটিতে ভাইরাস শনাক্ত হয়। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১৫টি ও ল্যাব এইডে ৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে সবক’টির নেগেটিভ আসে।

চট্টগ্রামের ১৫৩ জনের নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় গ্রামের ৭ জনের ফলাফল পজিটিভ পাওয়া যায়। তবে এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল এবং এন্টিজেন টেস্টে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সিভাসু’তে ১২ দশমিক ০৩, শেভরনে ১ দশমিক ১৯, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২ দশমিক ৩০, এপিক হেলথ কেয়ারে ৯ দশমিক ০৯, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ দশমিক ৫৭ এবং মেডিকেল সেন্টার ও ল্যাব এইডে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান