করোনায় চট্টগ্রামে ৪ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন ১৫৫ জনের দেহে জীবাণুর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল বুধবার নগরীর নয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ১৫৫ জীবাণুবাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১২০ জন এবং এগারো উপজেলার ৩৫ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৭৫ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪০ হাজার ৬৬৯ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ১০৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় ৬ জন করে, ফটিকছড়িতে ৪ জন, হাটহাজারী, সীতাকু-, আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও পটিয়ায় ৩ জন করে, মিরসরাইয়ে ২ জন এবং লোহাগাড়া ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় শহরের ২ জন ও গ্রামের ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এখন মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৫৪৯ জন। এর মধ্যে শহরের ৪০৬ জন ও গ্রামের ১৪৩ জন। গতকাল সুস্থতার সনদ দেয়া হয় ৮২ জনকে। ফলে জেলায় মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৬ হাজার ৮৬৭ জনে। এদের ৫ হাজার ১৮৭ জন হাসপাতালে ও ৩১ হাজার ৬৮০ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ৩৫ জন, ছাড়পত্র নেন ২৩ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৫২৭ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতকালের ৪ জনসহ চলতি মাসের ৫ দিনে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ জন মারা যান ২ মে। এদিন ১০৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হারও বেশি, ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১ ও ৫ মে মারা যান ৪ জন করে যা এ পর্যন্ত একদিনে সংখ্যায় কম। সর্বোচ্চ ১৯৮ জন শনাক্ত হয় ৩ মে। ১ মে সর্বনি¤œ সংক্রমণ ৮৪ জন। এদিনের হারও অপেক্ষাকৃত কম, ১০ দশমিক ১১ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩১৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের ৭টিসহ ২৩টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ২শ’ জনের নমুনায় শহরের ৩১ ও গ্রামের ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ১৭৮টি নমুনার ২০টিতে করোনার জীবাণু মিলে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শহরের ৮ ও গ্রামের ৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ২টিসহ ১৯টিতে করোনার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ২ জনসহ ৯ জন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫৩ জনের নমুনায় শহরের ১৬ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৬ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ জনসহ ৬ জন এবং মেডিকেল সেন্টারে ৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে শহরের ১ ও গ্রামের ১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। এদিন চট্টগ্রামের ৬টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৭ দশমিক ২১ শতাংশ, চবিতে ২৩ দশমিক ৫০, সিভাসু’তে ১১ দশমিক ২৩, চমেকে ১৯ দশমিক ৪০, আরটিআরএলে ৫০ শতাংশ, শেভরনে ৫ দশমিক ২৬, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩০ দশমিক ১৯, মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ দশমিক ০৭ এবং মেডিকেল সেন্টারে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।