কাঁকড়ার কেজি ১৮০০ টাকা

একটু বড় আকারের কাঁকড়া বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। সুন্দরবনের আশেপাশের এলাকায় স্থানীয়ভাবে চাষ করা ঘেরের কাঁকড়া এমন দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। কাঁকড়া চাষ করে বদলে গেছে অনেক মানুষের ভাগ্য। তাই দিন দিন সুন্দরবনের আশপাশের এলাকায় কাঁকড়া চাষীর সংখ্যা বাড়ছে।

দেশের বাজারে তেমন একটা চাহিদা না থাকলেও এ অঞ্চলে উত্পাদিত কাঁকড়া বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এই এলাকার আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন,বেশ কিছুদিন ধরে বড় আকারের কাঁকড়ার এখানে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। অথচ একই সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

কয়েক বছর ধরে অনেকে চিংড়ি ঘেরের জায়গায় গড়ে তুলেছেন কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ-এর ঘের। এসব ঘেরে নদীর পানির সঙ্গেই ঢুকে পড়ে কাঁকড়ার পোনা। ফলে চিংড়ির মতো দাম দিয়ে কাঁকড়ার পোনা কেনা লাগে না।

বেশিরভাগ সময় সুন্দরবন থেকে ছোট ছোট কাঁকড়া আনা হয়। এরপর সেগুলো ছেড়ে দেয়া হয় কাঁকড়ার ঘেরে। আবার ২০-২৫ দিনের মাথায় মোটাতাজা করে তা বিক্রি করা হয়। সাধারণত কাঁকড়ার ঘেরে ভাইরাস আক্রমন করে না। তাই বিনিয়োগে ঝুঁকি নেই বললেই চলে।

সুন্দরবনে যেসব বড় কাঁকড়া ধরা পড়ে, তা সরাসরি রফতানি করা হয়। জেলেরা প্রথমে কাঁকড়া ধরে কাঁটাযুক্ত পা দুটি বেঁধে ফেলেন। তারপর আড়তে এনে সাইজ বাছাই করে রফতানি করেন। বিদেশে জীবিত কাঁকড়াই রফতানি হয়।

কাঁকড়া চাষ, সংগ্রহ ও বিক্রির সঙ্গে বর্তমানে দাকোপের লাখখানেক মানুষ যুক্ত। এখানকার মৌখালী গ্রামে প্রতি সপ্তাহে ৫০ লাখ টাকার কাঁকড়া কেনাবেচা হয়ে থাকে।

দাকোপের বিভিন্ন স্থান হতে কাঁকড়া ধরে নিয়ে আসা হয় চালনা বাজারের আড়তে। এ বাজারে এখন চিংড়ি মাছের আড়তের চেয়ে কাঁকড়ার আড়ত বেশি এবং প্রতি বছরই এর আড়ত বাড়ছে। তবে প্র্রায় সব বাজারেই এখন মাছের সঙ্গে কাঁকড়াও কেনাবেচা হচ্ছে।
চালনা বাজারে আগে হাতেগোনা এক-দুটি আড়ত ছিল। এখন সেখানে ১৪-১৫টি আড়ত আছে।

কাঁকড়া ব্যবসা বেশ লাভজনক। বিশ্ববাজারে সুন্দরবনের কাঁকড়ার চাহিদা বেশি। কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ করে এলাকার চাষীরা দ্রুত লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার পক্ষ হতে কাঁকড়ার উন্নত চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারও বিষয়টি নিয়ে নতুনভাবে ভাবনা-চিন্তা করছে।