গরমে খান তরমুজ

গরমে পানি শুষ্কতা কমাতে বেশি করে তরমুজ খান। আর ভুল করেও তরমুজের বিচি ফেলবেন না য়েন। আমেরিকার কৃষি দফতর জানিয়েছে, তরমুজের বিচিতে রয়েছে অসাধারণ গুণ। এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অজ্ঞতার কারণেই মানুষ এটি ফেলে দেয়।

বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ বলছে, মৌসুমি ফল তরমুজ গরমে পানির চাহিদা মেটানোর জন্য উপযোগী। এতে থাকা নানান পুষ্টি ও খনিজ উপাদান মানবদেহ সতেজ রাখতে সাহায্য করে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি বিটা ক্যারটিন, ভিটামিন বি-১ এবং বি-২ পাওয়া যায়। যা গরমে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজে ৯০ থেকে ৯৫ ভাগই জলীয় অংশ। এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজ থেকে ১৬ কিলোক্যালরি খাদ্য শক্তি ও ০.২ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়।

তরমুজ আয়রনের ভালো উৎস। ১০০ গ্রাম তরমুজে ৭.৯ মি.গ্রা আয়রন থাকে। এছাড়া ৩.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.২ গ্রাম প্রোটিন ও ১.১ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও ১ মি.গ্রা ভিটামিন সি, ০.০২ মি.গ্রা বি-১, ০.০৪ মি.গ্রা বি-২ এবং ০.৩ মি.গ্রা অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে।

লাইকোপেন নামক উপাদানের জন্য তরমুজের রং লাল হয়, এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত। তরমুজ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। রয়েছে ভিটামিন সি ও বিটা-ক্যারোটিন যা হৃদরোগ, এক্সিমা ইত্যাদি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এর বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে ও ছানি পড়া সমস্যা প্রতিহত করে।

তরমুজে ফ্যাট বা চর্বি নেই বললেই চলে। তাই এটা খেলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কোলেস্ট্রলের মাত্রা বৃদ্ধির ঝুঁকি কম থাকে।

তবে নিরামিষ তরিতরকারিতে তরমুজের খোসা ছাড়ানো সাদা দানা আমরা খেলেও, তরমুজের বিচি খাওয়ার চল নেই। আমেরিকার কৃষি দফতর পরামর্শ দিচ্ছে, তরমুজের দানা ফেলবেন না। তরমুজ কাটার সময় দানাগুলো একজায়গায় জড়ো করে, ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে রেখে দিন। দিনে যখন খুশি যেভাবে খুশি খেয়ে ফেলুন।

কারণ তরমুজের বিচির উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। একজন ব্যক্তির সারাদিনে যে পরিমাণ প্রোটিন প্রয়োজন পড়ে, তার ৬০% আপনি পাবেন এককাপ (৩০.৬ গ্রাম) তরমুজের বিচিতে। শরীরের পক্ষে প্রয়োজনীয় নানা ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। তার মধ্যে একটা আর্গিনাইন। যার কাজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ। করোনারি হার্ট ডিজিজের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এটা একটা জরুরি উপাদান। এ ছাড়াও গ্লুটামিক অ্যাসিড, লাইসিন, ট্রিপ্টোফানের মতো প্রোটিন রয়েছে তরমুজের বিচির মধ্যে।

এমআর/