চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫৭ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৩ দশমিক ০৩ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ৫৭ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫০ জন ও পাঁচ উপজেলার ৭ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজান ও হাটহাজারীতে ২ জন করে এবং পটিয়া, ফটিকছড়ি ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৪ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে শহরের ২৬ হাজার ৬২৮ ও গ্রামের ৭ হাজার ৩৯৯ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্তদের কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৭০ জনই রয়েছে। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫২ জন। এতে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩১ হাজার ৪৭৬ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৩৪১ জন এবং ঘরে থেকে ২৭ হাজার ১৩৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৮ জন, ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৯৩৪ জন।
উল্লেখ্য, করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হতে এবার সময় নিয়েছে ১৫ দিন। এর আগে সর্বশেষ ১ হাজার পূর্ণ হয় ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল। অথচ তার আগে ৯ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করে গত ১৫ জানুয়ারি। সেদিন হার ছিল ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আট দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৬ জানুয়ারি। এদিন ১১৪ নতুন বাহক শনাক্ত হয়, সংক্রমণ হার ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় ৩০ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ২০৯ নতুন বাহক শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ সময়ে দুই করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। ২১ ডিসেম্বর মোট আক্রান্ত ২৯ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ১৫২ জন রোগী শনাক্ত ও ৩ জনের মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন নতুন ২৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রামে গত ১৪ দিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ’র নিচে থেকেছে। পহেলা ফেব্রুয়ারি এ মাসে একবারই শতক পেরিয়ে (১০৮ জন) যায়। এর আগে ১২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা ১৯ দিন করোনা ভাইরাসের বাহক সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। ১২ জানুয়ারি ১২৭ জন ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয়। সেদিন ২ রোগীরও মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ডটিও এ মাসে (৬ ফেব্রুয়ারি)। এদিন ১ হাজার ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ।
সোমবারের ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ১৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩৭৪ জনের নমুনার মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৭৩টি নমুনার ৩টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ২ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে।
নগরীর তিন বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৪৮টির মধ্যে ১০, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩১টি নমুনায় ৯ এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ১১ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফল নেগেটিভ আসে।
নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ০১ শতাংশ, চমেকে ৪ দশমিক ৫৪, সিভাসু’তে ৪ দশমিক ১১, চবিতে ৩ দশমিক ৫৭, শেভরনে ৬ দশমিক ৭৬, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৯ দশমিক ০৩ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।