চট্টগ্রামে এক সপ্তাহের মধ্যে গতকাল সংক্রমণের সংখ্যা ও হার ছিল বেশি

চট্টগ্রাম জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৩৪ জনের ২০ জনের নমুনায় সংক্রমণ শনাক্ত হলে হার বেড়ে দাঁড়ায় ১ দশমিক ০৯ শতাংশে। এ সময়ে এক রোগির মৃত্যু হয়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত চট্টগ্রামের করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে আজকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, চৌদ্দ পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র ল্যাব এইড ছাড়া অবশিষ্ট তেরো ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে গতকাল বুধবার ১ হাজার ৮৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২০ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৫ জন ও দুই উপজেলার ৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে পটিয়ায় ৩ জন ও হাটহাজারীতে ২ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ২ হাজার ২০২ জন। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৩ হাজার ৯৫৭ জন ও গ্রামের ২৮ হাজার ২৪৫ জন।
গতকাল করোনায় শহরের এক রোগি মৃত্যুবরণ করেন। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ১ হাজার ৩২২ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৭২২ জন ও গ্রামের ৬০০ জন।
উল্লেখ্য, এক সপ্তাহের মধ্যে গতকাল সংক্রমণের সংখ্যা ও হার বেশি। বিগত সাতদিনের চিত্রে দেখা যায়, ২০ অক্টোবর আক্রান্ত ৬ জন ও হার ০ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ২১ অক্টোবর আক্রান্ত ৩ জন ও হার ০ দশমিক ২৬ শতাংশ, ২২ অক্টোবর আক্রান্ত ১০ জন ও হার ০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ২৩ অক্টোবর আক্রান্ত ৪ জন ও হার ০ দশমিক ৪০ শতাংশ, ২৪ অক্টোবর আক্রান্ত ৪ জন ও হার ০ দশমিক ২০ শতাংশ, ২৫ অক্টোবর আক্রান্ত ৯ জন ও হার ০ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ২৬ অক্টোবর আক্রান্ত ১০ জন ও হার ০ দশমিক ৬১ শতাংশ শনাক্ত হয়। করোনাকালের সর্বনি¤œ সংখ্যক (৩ জন) সংক্রমিত ২১ অক্টোবর এবং সর্বনি¤œ (০ দশমিক ২০ শতাংশ) হারের রেকর্ড হয় ২৪ অক্টোবর।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৫৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে গ্রামের ২ জন আক্রান্ত ধরা পড়ে। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৪১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনও পজিটিভ পাওয়া যায়নি। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১১৬ টি নমুনার মধ্যে শহরের ১ ও গ্রামের ২ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১০৯ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৮ ও গ্রামের ১ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে সবক’টির নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। একটি মাত্র নমুনার এন্টিজেন টেস্টে নন-কোভিড বলে জানানো হয়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৩ টি নমুনায় শহরের একটির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৩৩৬, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১৮৮ ও মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৩ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে একটিও পজিটিভ চিহ্নিত হয়নি। এপিক হেলথ কেয়ারে ২৮ নমুনায় শহরের ২ টি এবং মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ১৮ নমুনার মধ্যে শহরের ৩ টিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রামের ৫ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টির রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক গতকালের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, শেভরনে ০ দশমিক ৩৪, সিভাসু’তে ১ দশমিক ৭২, চমেকে ৮ দশমিক ২৫, আরটিআরএলে ৩৩ দশমিক ৩৩, এপিক হেলথ কেয়ারে ৭ দশমিক ১৪ ও মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং বিআইটিআইডি, চবি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল, এন্টিজেন টেস্ট, মেডিকেল সেন্টার এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ০ শতাংশ।