চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ আরো বেড়েছে

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরো বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১২৭ জনের দেহে জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে হয়। সংক্রমণের হার ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ সময় করোনায় কেউ মারা যায়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৯৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ১২৭ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১শ’ জন এবং এগারো উপজেলার ২৭ জন। উপজেলা পর্যায়ে শনাক্ত ২৭ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে ৭ জন, বোয়ালখালীতে ৪ জন, রাউজান, পটিয়া ও সীতাকু-ে ৩ জন করে, মিরসরাইয়ে ২ জন এবং ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৫ হাজার ৯১৫ জন। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৮ হাজার ২৭২ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৬৪৩ জন।
গতকাল করোনায় কেউ মারা যাননি। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৭৮ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২৭৭ জন শহরের ও ১০১ জন গ্রামের। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৬৮ জনকে। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৭৩৫ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৪৮০ জন ও বাসায় চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ২৮ হাজার ২৫৫ জন। কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩০ জন । ছাড়পত্র নেন ৩৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯৪৩ জন।
উল্লেখ্য, গতকালসহ চলতি মাসের নয় দিনের পাঁচ দিন শনাক্ত রোগী একশ’ ছাড়িয়েছে। একশ’র বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয় ১ মার্চ ১০৯ জন, ৪ মার্চ ১০৭ জন, ৭ মার্চ ১১৪ জন ও ৮ মার্চ ১২২ জন। চলতি মাসের সবচেয়ে কম সংক্রমণ ছিল ৬ মার্চ, ৬৩ জন। অথচ, গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ও শেষদিন ছাড়া বাকী ২৬ দিন আক্রান্তের সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ডটিও ফেব্রুয়ারিতেই। ৬ ফেব্রুয়ারি ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। সংখ্যা ও হারে এটাই চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ রেকর্ড। জানুয়ারি মাসেও ২০ দিন শনাক্ত রোগী একশ’র নিচে ছিল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের ৪ জনসহ ১৭ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫৯১ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৫ জনসহ ২৯ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৫২টি নমুনায় গ্রামের ৬টিসহ ১৯টিতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৩০ জনের নমুনায় শহরের ২ জন ও গ্রামের ১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত আরটিআরএলে ২২টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৬টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৮৩, ইম্পেরিয়ালে হাসপাতালে ১৩৭ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ২২, ১৭ ও ১৪ টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। এ তিন ল্যাবেই শনাক্তদের ১৪ জন করে শহরের বাসিন্দা। এদিন চট্টগ্রামের ৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৮৫শতাংশ, চমেকে ৪ দশমিক ৯১, সিভাসু’তে ১০, চবি’তে ৩৬ দশমিক ৫৪, আরটিআরএলে ২৭ দশমিক ২৭, শেভরনে ১২ দশমিক ০২ শতাংশ, ইম্পেরিয়ালে ১২ দশমিক ৪১ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।