চট্টগ্রামে করোনায় নতুন আক্রান্ত ৯৮৯, একজনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৯৮৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। সংক্রমণ হার ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত একজন মারা যান।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আজকের রিপোর্টে এসব তথ্য জানা যায়।
চট্টগ্রামে এর আগে এর চেয়ে বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হয় গত ২৯ জুলাই ২০২১। এদিন ১ হাজার ৪৬৬ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৩৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ সময়ে ৯ রোগীর মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, শাহ আমানত বিমানবন্দরসহ নগরীর এগারো ল্যাবে এবং এন্টিজেন টেস্টে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ৩ হাজার ১৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৯৮৯ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৮২৯ জন ও এগারো উপজেলার ১৬০ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ৫১ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২২ জন, সীতাকু-ে ২০ জন, মিরসরাইয়ে ১৩ জন, রাউজানে ১১ জন, ফটিকছড়ি, সাতকানিয়া ও বোয়ালখালীতে ১০ জন করে, আনোয়ারায় ৯ জন, পটিয়ায় ৩ জন ও বাঁশখালীতে একজন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৭ হাজার ৪৪৬ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৮ হাজার ২৬৭ জন ও গ্রামের ২৯ হাজার ১৭৯ জন। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গতকাল শহরের এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৩৪১ জন হয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৭২৭ জন ও গ্রামের ৬১৪ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৪৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে শহরের ৯৬ জন ও গ্রামের ৯ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেকহা) ল্যাবে ৩০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে শহরের ১৩৪ ও গ্রামের ৯ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৬২ টি নমুনায় শহরের ৩০ ও গ্রামের ৪ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়। বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৫৯ নমুনার মধ্যে শহরের ৩৭ টিতে জীবাণু থাকার প্রমাণ মেলে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে ৩৮৪ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে শহরের ৯৬ ও গ্রামের ৯৮ জন সংক্রমিত বলে জানানো হয়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ৩৮৫ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৭৯ টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩৬৮ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৮৫ জন ভাইরাসবাহক শনাক্ত হন। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৮৫ নমুনায় শহরের ৩১ ও গ্রামের ২০ টিতে জীবাণু থাকার প্রমাণ মেলে। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ১২৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ২৬ টি আক্রান্ত পাওয়া যায়। এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতাল ল্যাবে ২৬১ নমুনায় শহরের ১৫৯ টিতে জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়ে। মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৩২ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতাল ল্যাবে শহরের ৯ ও গ্রামের ২০ জন আক্রান্ত পাওয়া যায়। এখানে ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৩২ বিদেশযাত্রীর নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১৫ জনের পজিটিভ রেজাল্ট আসে। তাদের যাত্রা বাতিল করা হয়। ল্যাব এইডের একমাত্র নমুনাটির নেগেটিভ রিপোর্ট দেয়া হয়।
এদিন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ২২ দশমিক ৪৮, চমেকহা’য় ৪৭ দশমিক ০৪, চবি’তে ৫৪ দশমিক ৮৪, আরটিআরএলে ৬২ দশমিক ৭১, এন্টিজেন টেস্টে ৫০ দশমিক ৫২, শেভরনে ২০ দশমিক ৫২, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৩ দশমিক ০৯, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১৭ দশমিক ৮৯, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ২০ দশমিক ৮০, এপিক হেলথ কেয়ারে ৬০ দশমিক ৯২, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৪৩ দশমিক ৮৩, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতাল ল্যাবে ১৫ দশমিক ৫৯, শাহ আমানত বিমানবন্দরে ৬ দশমিক ৪৬ এবং একমাত্র ল্যাব এইডে ০ শতাংশ।