চট্টগ্রামে করোনায় ৪ রোগীর মৃত্যু

চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ৪ রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। এ সময়ে নতুন ২০৫ জনের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর নয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ২০৫ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৬৪ জন এবং এগারো উপজেলার ৪১ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫৪৫ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ও গ্রামের ৯ হাজার ৮০২ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ৪১ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ১২ জন, রাউজান ও বোয়ালখালীতে ৫ জন করে, ফটিকছড়ি ও আনোয়ারায় ৪ জন করে, সীতাকু-ে ৩ জন, মিরসরাই, সন্দ্বীপ ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং রাঙ্গুনিয়া ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় চার জনের মৃত্যু হয়। এদের দু’জন শহরের ও দু’জন গ্রামের বাসিন্দা। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৫০৮ জন। এর মধ্যে ৩৭৭ জন শহরের ও ১৩১ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৯৯ জনকে। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩০ হাজার ১৮৬ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৫ হাজার ৩৬ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩১ হাজার ১৫০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ৪৭২ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের ৪ জনসহ চলতি মাসের ২৭ দিনে চট্টগ্রামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১১৯ জনে। জেলায় করোনাকালের সর্বোচ্চ ১১ রোগীর মৃত্যু হয় ২৫ এপ্রিল। তবে এদিন এ মাসের সর্বনি¤œ ১৭১ জন নতুন বাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ মাসে মাত্র তিনদিন জেলায় কোনো করোনা রোগী মারা যাননি। জেলার সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্তও শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। এদিন ৭ রোগীর মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৪৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৯ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৩২৫ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ জনসহ ৪২ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯৩টি নমুনায় শহরের ১৩ ও গ্রামের ১৮ টিতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২০৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১৪ জনসহ ৪০ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত আরটিআরএলে ৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ১টিসহ ২৩টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
বেসরকারি চার ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩০০, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৯৯, মা ও শিশু হাসপাতালে ২৮ এবং মেডিকেল সেন্টারে ১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শেভরনে শহরের ১৮টি, ইম্পেরিয়ালে গ্রামের ৪টিসহ ২১টি, মা ও শিশু’তে শহরের ৮টি এবং মেডিকেল সেন্টারে শহরের ৩টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। এদিন চট্টগ্রামের ৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ২ দশমিক ০৫ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ১২ দশমিক ৯২, চবি’তে ১৬ দশমিক ০৬, সিভাসু’তে ২৩ দশমিক ৯২, আরটিআরএলে ৪১ দশমিক ৮২, শেভরনে ৬ শতাংশ, ইম্পেরিয়ালে ২১ শতাংশ, মা ও শিশুতে ২৮ দশমিক ৫৭ এবং মেডিকেল সেন্টারে ৩০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।