চট্টগ্রামে করোনায় ৮ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ১ হাজার ১৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৪ জন পজিটিভ সনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। আরোগ্য লাভ করেছে ১০৬ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ১৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন ১০৮ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৫ জন ও ৯ উপজেলার ১৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ সীতাকুন্ডে ৬ জন, সন্দ্বীপে ৩ জন, ফটিকছড়ি, রাউজান ও সাতকানিয়ায় ২ জন করে এবং হাটহাজারী, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪০ হাজার ৯১১ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ১৮২ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্ত শহরের ৬ ও গ্রামের ২ রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৫৬৩ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৪১৬ জন ও গ্রামের ১৪৭ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১০৬ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ১৬৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ২২০ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩১ হাজার ৯৪৮ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ৩০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৫২২ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সর্বশেষ ৮ রোগীর মৃত্যু হয় ২৮ এপ্রিল। করোনাকালের সর্বোচ্চ ১১ জন মারা যান ২৪ এপ্রিল। এ মাসে ৭ জন ২ মে। গতকালের ৮ জনসহ চলতি মে মাসের প্রথম আট দিনে ৩৯ করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। দুই মাস ৩ দিনের মধ্যে গতকাল শনাক্ত রোগীর সংখ্যাই একদিনে সর্বনি¤œ। সর্বশেষ ৫ মার্চ ৬৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। হার ছিল ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এদিন এক জনের মৃত্যু হয়। মার্চের প্রথমদিকে (১, ২, ৪ ও ৬ মার্চ) সংক্রমণ হার গতকালের চেয়ে কম থাকলেও এরপর আর একদিনের জন্যও এর চেয়ে নিচে নামেনি।
এছাড়া, গতকাল আক্রান্তের চেয়ে সুস্থতার সংখ্যা বেশি এবং নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া ব্যক্তির চেয়ে সুস্থতার ছাড়পত্র গ্রহণ বেশি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেশষজ্ঞরা এ দু’টো দিককেই ইতিবাচক বলে মনে করেন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়। এতে ৫০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৭ জন ও গ্রামের ৭ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩৮৫ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ১৫ জন ও গ্রামের ৭ জনের দেহে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৪২ জনের নমুনায় গ্রামের ৩ জনসহ ১৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ৩৭ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ২ টিসহ ১২ টি নমুনায় করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১২ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৪ টি ও মেডিকেল সেন্টারে ১১ টি নমুনায় শহরের ৩ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ৪ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় চারটিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে শেভরনে ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ৭১, চমেকে ৭ দশমিক ৮৫, আরটিআরএলে ৩২ দশমিক ৪৩, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৩ দশমিক ৩৩, মেডিকেল সেন্টারে ২৭ দশমিক ২৭ এবং কক্সবাজার মেডিকেল ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।