চট্টগ্রামে করোনা কমছে

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও একশ’র নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন শনাক্ত ৮০ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৯ জন এবং সাত উপজেলার ২১ জন। উপজেলা পর্যায়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ১০ জন, চন্দনাইশে ৪ জন, রাউজানে ৩ জন এবং মিরসরাই, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা ও পটিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩ হাজার ২১৫ জন। এর মধ্যে শহরের ২৫ হাজার ৯৪৩ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ২৭২ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় কোনো করোনা রোগী মারা যায়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন আরো ৩৮ জন। এ সংখ্যা বেড়ে ৩০ হাজার ৮৮৫ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড় পত্র পেয়েছেন ৪ হাজার ২৩৫ জন এবং হোম আইসোলেশনে সুস্থতার পর ছাড় পত্র পান ২৬ হাজার ৬৫০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ১০ জন। ছাড়পত্র পান ১৫ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ২৫৪ জন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে করোনায় গত ৯ দিনে কারো মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ একজনের মৃত্যু হয় ২৪ জানুয়ারি। সেদিন নতুন ৯২ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এছাড়া, একটানা ১৯ দিন বাহক সংখ্যা একশ’র নিচে থাকলেও গত সোমবার ১০৮ নমুনায় জীবাণু পাওয়া যায়। এর আগে চট্টগ্রামে একশ’র বেশি ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এছাড়া, তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২৯ জানুয়ারি। এদিন ১ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ছিল করোনাকালের সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৮৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ১৩০ জনের নমুনায় ১৮ জনের মধ্যে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৬২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে ২০টিতে জীবাণুর অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ৪৮ নমুনার মধ্যে ৭টি ভাইরাসবাহক হিসেবে চিহ্নিত হয়।

নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৯০টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩টি, শেভরনে ৭৪টি নমুনার মধ্যে ৫টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ১৫টি নমুনার ২টিতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এছাড়া, চট্টগ্রামের ৬৪ জনের নমুনা পাঠানো হয় কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে। পরীক্ষায় সবক’টিরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে, এদিন নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার ধরা পড়ে, বিআইটিআইডি’তে ০ দশমিক ৫৭ শতাংশ, চমেকে ১৩ দশমিক ৮৫, চবিতে ৩২ দশমিক ২৬, সিভাসুতে ১৪ দশমিক ৫৮, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৫ দশমিক ৫৫, শেভরনে ৬ দশমিক ৭৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান