চট্টগ্রামে চয় মাসের মধ্যে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ

চট্টগ্রামে বগত সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার রেকর্ড হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হন ৫৭ জন। সংক্রমণ হার ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ সময় এক করোনা রোগির মৃত্যু হয় এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন ১ হাজার ২২ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আজ পাঠানো জেলার দৈনিক করোনা সংক্রান্ত রিপোর্টে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, এন্টিজেন টেস্ট, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও নগরীর আটটি ল্যাবে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৫৭ জনের মধ্যে শহরের ৩৬ এবং ছয় উপজেলার ২১ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ চন্দনাইশে ৯, রাঙ্গুনিয়ায় ৪, সীতাকু- ও ফটিকছড়িতে ৩ জন করে এবং রাউজান ও হাটহাজারীতে ১ জন করে রয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে শহরের ৭৩ হাজার ২১৮ ও গ্রামের ২৭ হাজার ৮০১ জন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় গ্রামের একজন মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা এখন ১ হাজার ২৭৭ জন। এতে শহরের ৭০৪ ও গ্রামের ৫৭৩ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ২২ জন। জেলায় মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮৬৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ১০ হাজার ৩০৬ এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৭৩ হাজার ৫৫৮ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১৯৮ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১৪৫ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৯৩ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকাল আক্রান্তের হার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণ হার ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর থেকে আর চারের নিচে আসেনি। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনসহ এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে মৃতের সংখ্যা ৪৫ জন হয়েছে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৬৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরীর ১৫ ও গ্রামের ১৪ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৭৭ জনের নমুনায় শহরের ৪ ও গ্রামের ৫ জনের দেহে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পরীক্ষিত মাত্র ৩টি এবং এন্টিজেন টেস্টে ২১টি নমুনার একটিরও রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি। জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৩টিতে জীবাণুর উপস্থিতি মিলে।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৪৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের একটি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৯৭ নমুনায় শহর ও গ্রামের একটি করে, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৫টি নমুনায় শহরের ২ ও গ্রামের একটি, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১২ নমুনার মধ্যে শহরের ২টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৬৪ নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৮টিতে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়।
এদিন চট্টগ্রামের ২৫ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সব ক’টিরই রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। তবে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ও ল্যাব এইডে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৬৪ দশমিক ২৩ শতাংশ, চবি’তে ১১ দশমিক ৬৯, আরটিআরএল-এ ৪২ দশমিক ৮৫, শেভরনে ০ দশমিক ২১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২ দশমিক ০৬, মা ও শিশু হাসপাতালে ৮ দশমিক ৫৭, মেডিকেল সেন্টারে ১৬ দশমিক ৬৬, এপিক হেলথ কেয়ারে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং চমেক হাসপাতাল, এন্টিজেন টেস্ট ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।