চেলসির বিপক্ষে দাপুটে জয়ে সিটির বছর শুরু

করোনাভাইরাস আতঙ্ক কাটিয়ে দারুনভাবে বছর শুরু করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। প্রিমিয়ার লিগে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে কাল চেলসিকে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছেন পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে সিটির দুর্দান্ত এই জয়ে অনেকটাই হতবাক হয়ে গিয়েছে ব্লুজরা। একইসাথে শিরোপা জয়ের চ্যালেঞ্জে শক্তিশালী ভাবে ফিরে আসলো সিটিজেনরা।
মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গার্দিওলার খেলোয়াড়রা মাত্র একটি ম্যাচে দুইয়ের অধিক গোল করেছিল। কিন্তু কাল বিরতির আগেই ইকে গুনডোগান, ফিল ফোডেন ও কেভিন ডি ব্রুইনার গোলে ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া সিটিজেনদের ধরাটা চেলসির পক্ষে অনেকটাই অসম্ভব ছিল। দুর্দান্ত এই জয়ে শীর্ষে থাকা দুই দল লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকলো সিটি। কিন্তু শীর্ষ দুই দলের থেকেই এক ম্যাচ কম খেলেছে গার্দিওলার শিষ্যরা।
করোনা মহামারী এই দূর্যোগের সময়ও ট্রান্সফার মার্কেটে ২২০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে হইচই ফেলে দেয়া চেলসি যে এবারের মৌসুমে শিরোপা দৌঁড়ে অন্যতম বড় একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে তা অনুমেয় ছিল। কিন্তু মৌসুমের শুরুটা ভাল হলেও শেষ ৬টি ম্যাচের মাত্র একটিতে জয়ী হয়ে ফ্রাংক ল্যাম্পার্ডের দল বর্তমানে টেবিলের অষ্টম স্থানে রয়েছে। এক ম্যাচ বেশী খেলে শীর্ষে থাকা দুই দলের থেকে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে লিভারপুল ও সিটির তৈরী করা মানের সাথে মানিয়ে নিতে হলে প্রতিভাবান স্কোয়াডের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত দক্ষতাগুলোকে একটি দল হিসেবে সামনে নিয়ে আসা এখন ল্যাম্পার্ডের সামনে মুল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সিটির হয়ে কাল মাঠে নামতে পারেননি এডারসন, কাইল ওয়াকার, ফেরান টোরেস ও গাব্রিয়েল জেসুস। ইতোমধ্যেই এভারটনের সাথে গত সোমবার সিটির ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। যে কারনে কাল স্ট্যামফোর্ড সফরে সফরকারীরা তাদের বদলী বেঞ্চ সমৃদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। করোনাভাইরাস আইন ভেঙ্গে বড়দিনের পার্টি আয়োজন করে অভিযুক্ত হয়েছেনন বেঞ্জামিন মেন্ডি। ফরাসি এই তারকা ডিফেন্ডারের বিপক্ষে তদন্তের ঘোষনা দিয়েছে সিটি। এডারসনের অনুপস্থিতিতে কাল সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগে অভিষেত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোলরক্ষক জ্যাক স্টিফেনের। এই প্রথমবারের মত চেলসির আক্রমনভাগে একসাথে ছিলেন ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডে আসা তিন স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ, টিমো ওয়ার্নার ও হাকিম জিয়েচ। এলোমেলো হয়ে যাওয়া দলে ডি ব্রুইনা, ফোডেন ও রাহিম স্টার্লিংয়ের মাঝে অনেকটা এগিয়ে খেলেছেন। অপরিচিত ফর্মেশনের সাথে মানিয়ে নিতে সিটির ১০ মিনিট সময় লেগেছে। ছন্দ ফিরে পেয়েই আর পিছনে তাকাতে হয়নি সিটিজেনদের। হুয়াও ক্যান্সেলোর দুর্দান্ত একটি থ্রু বলে প্রথম বড় সুযোগটি হাতছাড়া করেন ডি ব্রুইনা। ১৮ মিনিটে গুনডোগান অবশ্য কোন ভুল করেননি। তিন মিনিট পর ডি ব্রুইনার ক্রস থেকে পোস্টের খুব কাছে থেকে দারুন ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ফোডেন।
এর আগে বার্সেলোনা ও সিটির বস হিসেবে স্ট্যামফোর্ড সফরে গার্দিওলা পাঁচবারের প্রচেষ্টায় মাত্র একবার সফল হয়েছিলেন। কিন্তু কাল ৩৫ মিনিটের মধ্যেই তার দলের জয় নিশ্চিত হয়। ডি ব্রুইনা যখন স্টার্লিংকে বল এগিয়ে দেন তখন চেলসির ১০জন খেলোয়াড়রই রক্ষনভাগে নেমে এসেছিল। কিন্তু স্টার্লিংয়ের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে ডি ব্রুইনা গোল করে দলের বড় জয় নিশ্চিত করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে স্কোরলাইন সমৃদ্ধ করার বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেছে সিটিজেনরা। ফোডেনের হেড পোস্টের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। গুনডোগান নিজের দ্বিতীয় গোলের সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি। স্টপেজ টাইমে ক্যালুম হাডসন-ওডুই চেলসির হয়ে এক গোল পরিশোধ করেছে যা স্বাগতিকদের শুধু সান্তনাই উপহার দিয়েছেন।