ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের তালিকা করে তাদের গ্রেফতার করুন : ডিএমপি কমিশনার

ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা উত্তোলন কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিবহনের ক্ষেত্রে এবং নগরবাসীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ দমন করা যাবে না, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে অপরাধ প্রতিরোধ করতে হবে, এটাই আসল পদ্ধতি বলে জানিয়েছেন কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার রোববার সকালে রাজারবাগের পুলিশ অডিটরিয়ামে ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি এ নির্দেশনা দেন।
এবার রমজান মাসে স্কুল খোলা থাকবে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারের রমজানে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উপর ব্যাপক চাপ থাকবে, এটা ডিএমপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। থানার টহল দলগুলোকে প্রত্যেক বড় বড় মোড়গুলোতে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করার নির্দেশনা দেন তিনি।
গত কয়েক মাসে ঢাকা মহানগরীর কোথাও কোন বড় ধরনের অঘটন না ঘটায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন,‘এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সকলকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে শতভাগ উজার করে দিতে হবে। সবার চলাচলের নিরাপত্তা বিধান করতে পারলেই আমরা সফল হিসেবে গন্য হবো’।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে তেজগাঁও বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে মোহাম্মদপুর থানা। তবে ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি করে প্রথম হয়েছে উত্তরা বিভাগ। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সহকারি পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মুজিব আহম্মেদ পাটওয়ারী। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম আর পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্)দের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্) মো. তোফাজ্জল হোসেন।
শ্রেষ্ঠ এসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও লালবাগ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মামুন হোসেন। শ্রেষ্ঠ এএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন ও মতিঝিল থানার এএসআই মো. হেলাল উদ্দিন। শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন। অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন দারুসসালাম জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান। বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই জহির উদ্দীন আহমেদ। মাদক উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন পল্টন মডেল থানার এসআই সুজন কুমার তালুকদার এবং চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. শরিফুল ইসলাম।
৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন একই বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারি পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস। অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন গোয়েন্দা মতিঝিল  বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহিদুর রহমান। মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে প্রথমস্থান অর্জন করেছেন গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারি পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস, তিনি চোরাই গাড়ি উদ্ধার করেও শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন।
৮টি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারি পুলিশ কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হয়েছেন একই জোনের টিআই সরদার মোহাম্মদ তরিকুল আলম। শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট অথবা টিএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট মফিজুর রহমান ও মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট মো. ইমরান নাজির।
এছাড়াও ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগসহ ১৫টি বিভাগ ও ১০২ জন অফিসার এবং ফোর্সকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, যুগ্ম ও উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।