জনগণের অর্থের এক পয়সাও অযথা ব্যয় করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ আঘাত হানতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে তিনি যেখানে জনসাধারণের অর্থ ব্যয় জড়িত সেখানে অযথা এক পয়সাও ব্যয় না করতে আবারও নির্দেশনা দিয়েছেন।

রবিবার সকালে সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিট-সংস্থাকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাভার সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

তিনি বলেন, অনেক দেশ যেখানে মারাত্মক অর্থনৈতিক বাধার মুখে পড়ছে, সরকার সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে যা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে খুব কঠিন কাজ ছিল।

‘সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে আমরা বাজেটটি ঘোষণা দিয়েছি, আমরা বলেছি যে জনসাধারণের অর্থ ব্যয় করার বিষয়ে প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে কারণ করোনাভাইরাস যদি আবারও আঘাত করে তবে আমাদের বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, আমাদের আবারও জনগণকে সহায়তা করতে হবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারকে চিকিত্সা সরবরাহ করতে হবে, ওষুধ সংগ্রহ করতে হবে এবং আরও বেশি চিকিৎসক ও নার্সের প্রয়োজনও হতে পারে।

‘এসব বিবেচনা করে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত এক পয়সাও আমাদের ব্যয় করা উচিত নয়। ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে হবে,’ বলেন তিনি।

খাদ্য সংকট যাতে দেখা না দেয় সেজন্য খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশ খাদ্য সংকটে ভুগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলস্বরূপ, আমরা সেই সংকটের মুখে পড়ছি না।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এবং  এটি আবারও আঘাত হানার আশংকা রয়েছে উল্লেখ করে, পূর্ববর্তী সময়ের মতো সকলকে খাদ্য উত্পাদন বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশে করোনাভাইরাস রোধে প্রাথমিক পর্যায়ে গৃহীত সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে যাতে আমরা যেকোনো বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারি এবং আমাদের তা করতেই হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ এবং আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।

তিনি বলেন, ‘কোনো সেনাবাহিনী যদি মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তবে তারা জিততে পারে না। সুতরাং, সকলকে সামাজিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে জীবনের গৌরব অর্জন করতে হবে এবং পেশাদার দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’

সকল সেনা সদস্যদের দেশপ্রেম এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে তাদের দায়িত্ব পালন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি সরকারের মূল লক্ষ্য এবং  সেদিকে লক্ষ্য রেখে তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিট-সংস্থার হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।