জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীর মেধা মনন ও স্বকীয়তাকে সর্বক্ষেত্রে সমসুযোগ ও সমঅংশগ্রহণের মাধ্যমে সুব্যবহার করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন।

তিনি বলেন, “জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অভ চেঞ্জ, শিক্ষায় লিঙ্গসমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর “শান্তি বৃক্ষ” এবং গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ ‍শনিবার দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন। এ উপলক্ষে তিনি বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

এ বছর নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারীর অধিকার’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর নারীসহ ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনদের এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতগণকে, যাঁদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার বিনিময়ে নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নারীদের সম্পৃক্ত করেছিলেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সকল কর্মকান্ডে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১১ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। “ জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীকে সহযাত্রী করা হয়েছে। নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১”, নারী উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩সহ ডিএনএ আইন, যৌতুক নিরোধ আইন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন’ ও ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা ।

এছাড়াও নারী শিক্ষা প্রসার, নারীর দারিদ্র্যবিমোচন, বাল্যবিবাহ নিরোধ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে নারীর অংশগ্রহণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি স্ববেতনে ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করেছি। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা-তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা-উপজেলায় ৬০টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল ও ন্যাশনাল হেল্প লাইন (১০৯) চালু করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২০’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সূত্র – বাসস।

আজকের বাজার/এ.এ