জয়পুরহাটে ভক্তদের পদভারে মুখরিত শিবরাত্রি উৎসব সমাপ্ত

তিন শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য নিয়ে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ মহাতীর্থস্থান বেলআমলা বারশিবালয় মন্দিরে ভক্তদের পদভারে মুখরিত দু’দিন ব্যাপী শিবরাত্রি উৎসব ও মেলা শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হিন্দু ভক্তদের পদভারে মূখরিত হয়ে ওঠে বেলআমলার ঐতিহাসিক বারশিবালয় প্রাঙ্গন।
জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরদিকে অবস্থিত বেলআমলা বারশিবালয় মন্দির। যার আধা কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে একশিব মন্দির ও পাঁচশিব মন্দির নামে আরো দুটি মন্দির। ফাল্গুনের চতুর্দশীতে শিবরাত্রি উপলক্ষে প্রায় তিন শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য হিসেবে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ৪ প্রহরব্যাপী পূজার পাশাপাশি মেলার আয়োজন করা হয় দু’দিন ব্যাপী । দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিপুল সংখ্যক হিন্দু ও মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের ভক্তদের মুখে ধ্বনিত হচ্ছে ”সত্যম শিবম সুন্দরম”, ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় করুণত্রয় হে তবে। ”নিবেদয়ামি চাতœানাং ত্বংগতি পরমেশ্বর”। আগত ভক্তদের এখানে থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। মনের নানা বাসনা পুরনের আশায় পূন্নার্থীরা বারশিবালয়ের উত্তর পাশ ঘেঁসে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর জলে বারুনী¯œান শেষে পূজা অর্চনা করেন। শিবরাত্রি উৎসব উপলক্ষে এখানে মেলা বসে। মেলায় রয়েছে বিভিন্ন রকমের চামুচ, খন্তা, বেরী, দা, বটি, হাসুয়া, পান কাটি, পূজার ঘরের সাজ, বাঁশ-বেতের তৈরি জিনিস পত্র। এ ছাড়াও কাঠের ও লোহার তৈরি বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র পাওয়া যায়। শিশুদের খেলনা, শাঁখা-সিঁদুর, সহ মিষ্টি-মিষ্টান্নও পাওয়া যায় এখানে। শিবরাত্রি উৎসব হিন্দু, বিশেষ করে মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও বারশিবালয় মন্দির প্রাঙ্গন পরিণত হয়েছে হিন্দু-মুসলিমের অসাম্প্রদায়িক মিলন মেলায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় জয় মা কালীর অমাবস্যা পূজার মধ্য দিয়ে পুন্নার্থীদের মিলন মেলা শেষ হয়। সুষ্ঠুভাবে শিবরাত্রি উদযাপনে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। বারটি শিবমন্দির একসঙ্গে থাকায় এর নাম হয় বারশিবালয়। কত বছর আগে এটি নির্মিত তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও প্রায় তিন শত বছর আগের তৈরি বলে মনে করেন বারশিবালয় মন্দির কমিটির সদস্যরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাতীর্থস্থান বারশিবালয় মন্দিরে শিবরাত্রি উৎসব ও মেলায় সকল ধর্মের লোকজন অংশগ্রহণ করে থাকেন বলে জানান, জেলা হিন্দুবৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ্যাড: নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল।