টানা চারদিন চট্টগ্রাম করোনাশূন্য

চট্টগ্রামে গতকালও নতুন কোনো সংক্রমণ না পাওয়ায় একটানা চারদিন করোনাশূন্য কেটেছে। তবে এ অবস্থাকে করোনামুক্ত বলতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। উপরন্তু মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতায় উৎণ্ঠিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আজ পাঠানো রিপোর্টে জানা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ও নগরীর আট ল্যাবে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেনি। ফলে জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৩৪ জনই রয়েছে। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৯২ হাজার ৯৬ ও গ্রামের ৩৪ হাজার ৫৩৮ জন। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গতকাল শহর ও গ্রামে কেউ মারা যায়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৬২ জনই রয়েছে।

এদিকে, চারদিনের টানা করোনাশূন্য পরিস্থিতিকে চূড়ান্ত স্বস্তির মানতে নারাজ চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাসস’কে তিনি বলেন, ‘চারদিন, ছয়দিন নয়, টানা দুই সপ্তাহ নতুন সংক্রমণ না পেলে আমরা জেলাকে করোনাশূন্য বলতে পারবো।’ তবে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে সাধারণ মানুষের চরম উদাসীনতায় আমরা উৎকণ্ঠিত। সরকার করোনার চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মাস্ক পরিধানসহ কিছু স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ার সাথে সাথে মানুষ মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছেন, অন্য বিধিনিষেধও মানছেন না।’

সিভিল সার্জন আরো বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রেখেছেন। তারা যতক্ষণ আমাদের করোনামুক্ত ঘোষণা না করেন ততক্ষণ আমরা শঙ্কামুক্ত হতে পারি না। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি আবার কিছুটা খারাপ হয়েছে। একদিনেই দেড় লাখ সংক্রমণ ঘটেছে। এটা আমাদের জন্য শিক্ষা হতে পারে।’

গতকালের ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৫, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ৫৪, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৭, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১৫, মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ২১, এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতাল ল্যাবে ২৩, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৮ এবং এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতাল ল্যাবে ১৩ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নয় ল্যাবরেটরিতে মোট ২৪৭ নমুনার একটিতেও করোনার জীবাণু মিলেনি।

এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত কভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, ল্যাব এইড, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এভারকেয়ার হসপিটাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। নমুনা সংগ্রহের কোনো কেন্দ্রে কারো এন্টিজেন টেস্ট করা হয়নি। চট্টগ্রামের একটি নমুনাও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান