ডিএসই নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আসন্ন ট্রেকহোল্ডার পরিচালক নির্বাচনে দুই পদের বিপরীতে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার করছেন। আগামী ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রার্থীদের কাউকে ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডিএসইর পরিবেশ জমজমাট। সবার মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা কাজ করছে। প্রতিযোগীদের মতো ভোটারদের মধ্যেও রয়েছে উৎসাহ। ভোট দেওয়া নিয়ে হিসাব কষছে ভোটাররা। সব মিলিয়ে প্রতিযোগীদের মধ্যে টাইট প্রতিযোগিতা হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে এখানে পোস্টার, ফেস্টুনের ব্যবহার না থাকায় বাইরে থেকে তা বোঝার উপায় নেই।

বর্তমান শেয়ারহোল্ডার পরিচালক খাজা গোলাম রসূল ও মোহাম্মদ শাহজাহানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ পর্ষদে দুটি পদ শূন্য হচ্ছে। ফলে এই দুই আসনের জন্য পরিচালক নির্বাচন হবে। যার জন্য ৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীরা হলেন- স্যার সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান, ধানমন্ডি সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান খান, র‌্যাপিড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হানিফ ভূইয়া ও কান্ট্রি স্টকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা আসিফ আহমেদ।

প্রতিযোগী শরীফ আতাউর রহমান বলেন, কোনো প্রার্থীই কারো থেকে পিছিয়ে নেই। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে কেউ কেউ প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে পরিচালক হওয়ার পরে ডিসইতে সময় দেওয়া নিয়ে। পরিচালক হওয়া মানে তো ডিএসইতে গিয়ে সারা দিন বসে থাকা না। আমাদের কাজ ব্যবসায় করে টাকা আয় করা। পরিচালক হলেও করতে হবে, না হলেও করতে হবে। এর আগেও একাধিকবার পর্ষদে ছিলাম। এবারও ভোটাররা চাইলে আসব।

এ সময় তিনি জানান, ডিএসইর নির্বাচন খুব সহজ এবং সুন্দর হয়। এখানে কোনো পোস্টার নেই।

আরেক প্রতিযোগী মো. হানিফ ভূইয়া বলেন, নির্বাচনে অন্যবারের মতো এবারও তীব্র প্রতিযোগিতা হবে। এখানে কোনো প্রতিযোগীকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। যে কেউ জিততে পারে। তবে ফল যাই হোক, খুশি মনে মেনে নেব। সবারই উচিত জয়ের ন্যায় পরাজয়কেও আনন্দের সাথে নেওয়া।

তিনি আরও জানান, ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়া পর্ব মোটামুটি শেষ। এখন ফোনে হায় হ্যালো হয়। এ ছাড়া ডিএসই ক্লাবে নিয়মিত প্রায় ৫০ জন সদস্যের সঙ্গে দেখা তো হয়ই। আর ভোটাররা এরই মধ্যে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বলেও মনে করেন তিনি। তবে প্রতিযোগীদের মধ্যে কেউ কেউ একজন আরেকজনের সমালোচনা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুস সামাদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের অন্য ২ সদস্য হলেন-হারুন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুন-উর-রশিদ ও এম অ্যান্ড জেড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মনজুর উদ্দিন আহমেদ।

আগামী ২১ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোনো বিরতি ছাড়া ভোটগ্রহণ চলবে। মতিঝিলে ডিএসই ভবনের নিচতলায় এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা শেষে সেদিনই ফলাফল জানাবে নির্বাচন কমিশন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হবে ডিএসইর ৫৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএমে)।

ডিমিউচুয়ালাইজেশনের আইন অনুসারে স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদে মোট ১৩ জন সদস্য থাকেন। এর মধ্যে সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক, চারজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক, একজন কৌশলগত বিনিয়াগকারী পরিচালক ও ১ জন স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শেয়ারহোল্ডার পরিচালকরা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। কারো মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শূন্যপদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ডিএসই।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচনের মাধ্যমে ডিএসইর পর্ষদে আসেন স্টক এক্সচেঞ্জটির সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট