দেশ ছেড়ে পালালেন বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট

বিক্ষোভের মুখে নিজ দেশ থেকে পালিয়ে মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে রোববার তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর চাপের মুখে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর বন্ধু রাষ্ট্র মেক্সিকোর রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করে সোমবার মধ্যরাতে তিনি সেখানে পাড়ি জমান।

দেশ ছেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এক টুইট বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, বলিভিয়া ছেড়ে যেতে তার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আরও ‘বল ও শক্তি’ নিয়ে তিনি ফিরে আসবেন।

এদিকে মোরালেসকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রাদ। মোরালেস মেক্সিকোর সরকারি একটি বিমানে উঠেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

মেক্সিকোতে বামপন্থি সরকার ক্ষমতাসীন এবং তারা বলিভিয়ার ঘটনায় মোরালেসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইভো মোরালেস (৬০)। বিরোধী নেতা কার্লোস মেসা’র ডাকে বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ফের নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন দেশটির প্রথম এই আদিবাসী প্রেসিডেন্ট। তবে এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এই রাজনীতিক। এ সময় দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারবিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেন এই বাম রাজনীতিক।

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে মোরালেস বলেন, আমাদের লড়াই এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। সমতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।

বলিভিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান উইলিয়ামস কালিম্যান বলেছেন, দেশের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে বলেছি।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কার্লোস মেসাকে পরাজিত করে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইভো মোরালেস। তবে কারচুপির অভিযোগ তুলে ওই নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেন পরাজিত প্রার্থী কার্লোস মেসা। দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেসার সুসম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।

রোববার মোরালেসের পদত্যাগের পর সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে অন্য আঞ্চলিক নেতাদের জন্যও সতর্কবার্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এটি ভেনেজুয়েলা ও নিকারাগুয়ার অবৈধ শাসকদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা। গণতন্ত্র ও মানুষের আকাঙ্ক্ষাই বিজয়ী হবে।

আজকের বাজার/এমএইচ