দ্বিতীয়বার ব্যয় বাড়ছে কিশোরগঞ্জ-মিটামাইন সড়ক উন্নয়নে

দ্বিতীয় বারের মতো ব্যয় বাড়ছে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট-মিঠামইন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে। অনুমোদনের সময় প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধন করে ব্যয় ৮৯ কোটি ২০ লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে দ্বিতীয় সংশোধনের মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বাস্তবায়নের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব আগামী মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানাগেছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট-মিঠামইন জেলা সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার। তাই প্রকল্পের আওতায় চামড়াঘাট থেকে মিঠামইন পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সাব-মার্জিবল সড়ক নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করাহয়। চামড়াঘাট হতে মিঠামইন পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ না থাকায় শুস্ক মৌসুমে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রকল্পের আওতায় শুস্ক মৌসুমে চলাচলের উপযোগী সাবমার্জিবল সড়ক নির্মাণের সংস্থান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত সার্ব-মার্জিবল সড়কটি নির্মাণের জন্য প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২০০৮ সালে রেট সিডিউল অনুযায়ী ৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১১ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৩ সালে জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদিত হয়।

পরবর্তীতে সড়ক জনপথ অধিদফতর ২০১১ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন ও কতিপয় অংকের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত ডিপিপি ৮৯ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১১ সালে জানুয়ারি হতে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ১ বছর এবং পরিকল্পনা কমিশন ২০১৭ সালে জুন পর্যন্ত ১ বছর বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে সওজ’র ২০১৫ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন এবং কতিপয় অংকের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধিও কারণে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে প্রকল্পটি দ্বিতীয়বার সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা যা প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অপেক্ষা ৪৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, ৫ দশমিক ৪২ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, ৮ দশমিক ৮২ কিলোমিটার আরসিসি পেভমেন্ট নির্মাণ, ৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নতুন ফেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, ৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ৪২ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ২৬৩ দশমিক ২৯ মিটার আরসিসি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ, ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৫৬ বর্গমিটার সিসি ব্লকসহ জিও টেক্সটাইল, ১ হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ, ২টি ফেরীঘাট নির্মাণ এবঙ সাইন, সিগন্যাল, কিলোমিটার পোস্ট ও গার্ড পোস্ট ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিমনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কিশোরগঞ্জ জেলার চামড়াঘাট থেকে মিঠাইন পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং হাওড় এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে তাই সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।