নকল টেস্ট রিপোর্ট উপস্থাপনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ

জাতীয় সংসদের সরকারী হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে নকল টেস্ট রিপোর্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে নেয়া অর্থ আদায়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কমিটির সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী ফরাজীর সভাপতিত্বে আজ সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সভায়এ পরামর্শ দেয়া হয়।

কমিটির সদস্য মোঃ আব্দুস শহীদ, র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জহিরুল হক ভূঞা মোহন, মনজুর হোসেন, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং মোঃ জাহিদুর রহমান সভায় অংশগ্রহণ করেন।

কমিটি ২০১০-১১, ২০১১-১২ অর্থবছরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের “জালিয়াতির মাধ্যমে নকল টেস্ট রিপোর্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে ৩ টি পূর্ত কাজের ৭ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৬১ টাকা ঠিকাদারকে পরিশোধ করায় সরকারের ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত আপত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে এবং অর্থ আদায়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

সভায় বলা হয় ২০১০-১১, ২০১১-১২ অর্থবছরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের “অনিয়মিতভাবে উন্নয়ন প্রকল্পের চাকুরিকাল গণনা করে টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড স্কেল প্রদান করায় এবং অনিয়মিতভাবে অস্থায়ী রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের পূর্বেই প্রকল্পের কর্মচারীদের চাকরি বিরতিকালের বেতন ভাতা বাবদ ৬ কোটি ৪৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৮০ টাকা পরিশোধ করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কমিটি এ আপত্তিতে একটি কমিটি গঠন করার সুপারিশ করেছে।

সভায় বলা হয় ২০১০-১১,২০১১-১২ অর্থবছরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের “জিএফআর ও সিপি ডব্লিউ ‘এ’ কোডের নির্দেশ উপেক্ষা করে লাইসেন্স নবায়ন ফি, তালিকাভুক্তি ফি, ফর্ম বিক্রি, টেন্ডার সিডিউল বিক্রি বাবদ আদায়কৃত রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না করে অনিয়মিতভাবে বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখায় সরকার ৯ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকা রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ কাজ সম্পাদনে ব্যর্থ ঠিকাদারের কার্যাদেশ জরিমানার ভিত্তিতে বাতিল করা সত্ত্বেও জরিমানার অর্থ আদায় না করায় সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৩ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়। এ আপত্তির অর্থ আদায় করে ২ মাসের মধ্যে জমা দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

সভায় বলা হয় ২০১০-১১,২০১১-১২ অর্থবছরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের “ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ কাজে শতকরা ৩৩ ভাগ রড কম ব্যবহার করা সত্ত্বেও মেজারমেন্ট নিয়ে বিল পরিশোধে সরকারের ২ কোটি ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ২৭৫ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ আপত্তির অর্থ ২ মাসে আদায় করতে বলা হয় এবং দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেছে কমিটি।

সভায় বলা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১০-১১ অর্থবছরের হিসাব সম্পর্কিত প্রাপ্য বৈদেশিক ভাতা মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ইউরোতে গ্রহণ করায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ ৯৫ হাজার ৫১৮ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ও “প্রাপ্য আপ্যায়নভাতা মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ইউরোতে গ্রহন করায় ২৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৬৯ টাকা ক্ষতি” এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরের “প্রাপ্য বৈদেশিক ভাতা আপ্যায়নভাতা মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ইউরোতে গ্রহণ করায় ২ কোটি ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ১৮৭ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কমিটি এ আপত্তি নিষ্পত্তি করে।

সভায় কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেলসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, পররাষ্ট্র সচিব ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।