নাগরিকদের কাবুল থেকে সরিয়ে নিতে ফ্লাইট চালু করেছে যুক্তরাষ্ট ও ব্রিটেন

তালেবানরা একের পর এক অঞ্চল এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করে নেয়ায় রাজধানীতে নাগরিকরা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুক্রবার কয়েক হাজার সৈন্য মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।
তালেবানরা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় দাবি করেছে, এই এলাকায় তালেবানদের শক্ত অবস্থান রয়েছে, শুধুমাত্র রাজধানী কাবুল এবং অন্যান্য অঞ্চলের কিছু এলাকা সরকারের হাতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট ও ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে এই সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।
তালেবানের এক মুখপাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত অ্যাকাউন্টে টুইট করে জানিয়েছে, ‘কান্দাহার পুরোপুরি জয় করা হয়েছে। মুজাহেদিনরা শহীদ স্কয়ারে পৌঁছেছে।’
কান্দাহারের এক বাসিন্দা এই দাবীর সমর্থনে এএফপিকে বলেছেন, বাইরে সরকারী বাহিনীর অবস্থান প্রত্যাহার করে শহরের সরে গেছে।
সরকার এখন কার্যকরভাবে দেশের বেশীরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে, গত আটদিনে তালেবানরা শহরগুলো দখল করে নেয়ায় আফগান সরকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকারীরা হতবাক হয়ে পড়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহারের পাশাপাশি ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন-টাওয়ারে হামলার ঘটনায় শুরু হওয়া দুই দশকের যুদ্ধের অবসানে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণার পর তালেবানরা তাদের আক্রমণ জোরদার করে দ্রুত সময়ে দেশটির প্রায় গোটা অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। জো বাইডেন বলেছেন তিনি তার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। তবে কয়েকদিনে তালেবানরা শহরগুলো সহজেই দখল করে নেয়ায় তারা বিস্মিত এবং তারা নতুন করে হিসাব-নিকাশ করছে।
ওয়াশিংটন এবং লন্ডন বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী কাবুল থেকে দূতাবাস কর্মী এবং অন্যান্য নাগরিকদের দ্রুত সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে আমরা কাবুলে আমাদের বেসামরিক লোকদের আরো কমিয়ে আনছি।’
কাবুলে মার্কিন দূতাবাস খোলা থাকবে কীনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে প্রাইস বলেন, ‘দূতাবাস ত্যাগ নয়, কোন স্থানান্তর নয় এবং পুরোপুরি প্রত্যাহারও হবেনা।’
পেন্টাগণ জানিয়েছে, পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায় কাবুলে ৩ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে, তালেবানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনায় তাদের ব্যবহার করা হবে না।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, তাদের নাগরিক এবং সাবেক আফগান কর্মীদের সরিয়ে আনতে লন্ডন তাদের ৬০০ সৈন্য পাঠাবে।
প্রাইস বলেছেন, আফগান দোভাষী এবং আমেরিকানদের সহায়তাকারী অন্যান্যদের  সরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।