নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় শিশুসহ নিহত হয়েছে ১১ জন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় শিশু ও মুয়াজ্জিনসহ মোট ১১ জন মারা গেছেন। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন। তাদের শরীরের ৯০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে। হাসপাতালে এখনও ২৬ জন ভর্তি আছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহতরা হলেন, ইব্রাহিম (৪২), দেলোয়ার হোসেন (৪২), মোস্তফা কামাল (৩৫) সাব্বির (২১), জুয়েল (৭) জুবায়ের (১৮), হুমায়ূন কবির (৭০), জুনায়েদ (১৭), রিফাত (১৮) কুদ্দুস ব্যাপারী (৭০) ও জামাল (৪০)। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের তল্লা জেমস ক্লাব এলাকার বায়তুল সালাহ জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন লেগে অর্ধশতাধিক মুসল্লি দগ্ধ হয়েছেন।

এদের মধ্যে চল্লিশজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং ৩৭জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামকে) হাসপাতালে প্লাস্টিক সার্জারী (বার্ণ) ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এঘটনায় বাকীদেরকে নারায়নগঞ্জের স্থানীয় ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ওসি) মো. বাচ্চু মিয়া আজ শুক্রবার রাতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় একটি জামে মসজিদের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৭জনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এদের অনেকের অবস্থা আশংকাজনক। শুক্রবার রাতে এশার নামাজের জামাত চলাকালে এ বিস্ফোরণ হয়। মসজিদের ভেতরের এসি বৈদ্যুুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে বিস্ফোরন হতে পারে। এছাড়া মসজিদের ভেতর দিয়ে যাওয়া গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে।

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার গোলাম মোস্তফা জানান, হাসপাতালে চল্লিশজন দগ্ধ এসেছিলেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, প্রাথমিক তথ্যে ধারনা করা হচ্ছে, মসজিদের নিচ দিয়ে যাওয়া গ্যাস লাইনের লিকেজের কারনে মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে যায়। এসময় এসিতে শর্ট সার্কিট হয়ে মসজিদের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

রাতে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের যে লাইন গেছে সেটি লিকেজ হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে বিভিন্ন স্থান দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। মসজিদের ভেতরও গ্যাসের গন্ধ আছে।

বিস্ফোরণে মসজিদের ভেতরে থাকা ৬টি এসি, ফ্যান, বিদ্যুতের তার, প্যানেল বোর্ডসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান