নারী অধিকারের বাস্তবরূপ দেখতে চাই : সুলতানা কামাল

নারী অধিকারের যে কথা বলা হয়, তা শুধু কথাতেই নয়। বরং নারী অধিকারের বাস্তবরূপ দেখতে চান ‘আমরাও পারি’ জোটের চেয়ারপারসন ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।
বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি হাতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নারী দিবসের সূচনায় নির্যাতন, নিপীড়ন, অসমতার মতো সব বাধা তথা অন্ধকার দূরে ঠেলে আলোর পথে এগিয়ে চলার শপথ নিয়েছেন নারীরা।
শপথ পড়ান সুলতানা কামাল।
সুলতানা কামাল বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, পৃথিবীতে ঝড়-ঝঞ্ঝা, যুদ্ধ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যত মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি নারী তার ব্যক্তিগত জীবনে বিপদগ্রস্ত হয়েছেন। মোমবাতি জ্বেলে আজ আমরা নারীরা রাতের অন্ধকারের পাশাপাশি মনের আঁধার দূর করতে চাই।
তিনি বলেন, ভয়াবহ সব চিত্র বদলে দিতে হবে। এখনই নারী অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সমাজ বলে এখনই নয়। কিন্তু আমরা বলতে চাই, এখনই সময়। আমরা নির্যাতন সহ্য করবো না। মর্যাদার হানি ঘটবে এমন কিছুতে নিজেদের নেবো না।
তিনি  বলেন, শুধু মুখে বললে হবে না যে, আমরা নারীর অধিকার নিশ্চিত করবো, নারীর সম-অধিকারে আমরা বিশ্বাস করি, নারীর অগ্রযাত্রায় আমরা বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের উদ্যোগে নারী অধিকারের বাস্তব রূপ আমরা দেখতে চাই। আমরা সবক্ষেত্রে নিরাপদ থাকতে চাই। আামাদের নিরাপত্তার বিধান রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা তাদের করতেই হবে। তনু হত্যা, মারমা দুই নারীকে নির্যাতন, সাগর-রুনি হত্যার মতো ঘটনাগুলোর বিচার করতে হবে রাষ্ট্রকে।
এটা বললে হবে না, আমরা ক্ষমতায় থাকলে করবো। যারা রাজনীতি করেন, তারা ক্ষমতার বাইরে থাকলেও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
তিনি বলেন, ‘আমি একাধারে নারী, কন্যা, জায়া, প্রেমিকা। সবচেয়ে বড় হলো আমি মানুষ। এই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নারীরা সংগ্রাম করছে। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি ও সুশিক্ষার ব্যবস্থা না হলে রাষ্ট্রের কোনও লক্ষ্যই বাস্তবায়িত হবে না।’
নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও মনস্তাত্বিক পরিবর্তন আনতে হবে’ বলে মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, নারী দিবসে পুরুষদেরও বলতে হবে, তারা পুরুষ হওয়ার আগে মানুষ হবে। তাহলেই নারী দিবসের তাৎপর্য বাস্তবে প্রতিফলিত হবে।
এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ছাত্রী হলের পাঁচ শতাধিক ছাত্রী মোমবাতি হাতে শপথে অংশ নেন।
‘আমরাও পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আএম/