নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রবণতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইরানের আহ্বান

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রবণতা বন্ধ করতে তেহরান শনিবার ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একই ‘কানাগলি পথ’ অনুসরণ করায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছে। খবর এএফপি’র।
ইরানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান এক সাংবাদিককে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পরিকল্পনা করার অভিযোগে ইরানের চার নাগরিকের বিরুদ্ধে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়ার একদিন পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদাহ এমন মন্তব্য ব্যক্ত করেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে খতিবজাদাহ বলেন, ‘ওয়াশিংটনকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে তাদের অন্য কোন পছন্দ না থাকলেও এক্ষেত্রে তাদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রবণতা পরিত্যাগ করতে এবং ইরানের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। তেহরানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি ও আচরণ উভয় ক্ষেত্রে এমনটা করতে হবে।’
শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ বিদেশে ইরানের ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নজরদারির দায়িত্বে নিয়োজিত তেহরানের চার গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
মধ্য-জুলাইয়ে মার্কিন ফেডারেলের দেয়া অভিযোগপত্র অনুযায়ী, এসব গোয়েন্দা কর্মকর্তা তৃতীয় কোন দেশে গ্রেফতার করে সাজা দিতে ইরানে নিতে মসিহ আলিনাজাদের ইরান কেন্দ্রিক আত্মীয়স্বজনদের তাকে পোটাতে ২০১৮ সালে চাপে ফেলার চেষ্টা করে।
এক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ায় তারা গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে তার ওপর নজর রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ভাড়া করে বলে জানা যায়।
গত জুলাইয়ে খতিবজাদাহ আমেরিকার এমন অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও হাস্যকর’ অভিহিত করে ‘হলিউডের দৃশ্যবিবরণী’ হিসেবে তাদেরকে উল্লেখ করেন।
ট্রাম্পের শাসনামলে ওয়াশিংটন একতরফাভবে তেহরান ও বিশ্বের ক্ষমতাধর ছয় দেশের মধ্যে হওয়া ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।
বহুপাক্ষিক এ চুক্তির আওতায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরার বিনিময়ে তেহরানের বিরুদ্ধে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব দেয়া হয়।
২০১৮ সালে এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ছিল এক্ষেত্রে বড় আঘাত।
পরে নির্বাচনের মধ্যদিয়ে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় এসে বলেন, তিনি এ আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তিতে ওয়াশিংটনের পুন:অন্তর্ভূক্তি চান। তবে এক্ষেত্রে এপ্রিলে শুরু হওয়া ভিয়েনা আলোচনা জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অতি রক্ষণশীল ইব্রাহিম রাইসি জয়ী হওয়ার পর থেকে স্থবির হয়ে পড়ে।
আগস্টের শেষের দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি এ চুক্তি রক্ষার আলোচনায় তার পূর্বসূরির মতো একই দাবি করায় বাইডেনের প্রশাসনকে দায়ী করেন।
মঙ্গলবার ইরানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসাইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, আগামী দুই বা তিন মাস ভিয়েনা আলোচনা ফের শুরু হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
এক্ষেত্রে ইরান ২০১৭ সাল থেকে তেহরানে ওপর নতুন করে আরোপ করা বা ফের আরোপ করা সকল নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।