পাঁচ বছরে রাজস্ব আয়ের গড় প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ

শাহ্জাহান সাজু:
বিদেশী ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বা রাজস্ব আয় বাড়ানোর যে পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে, তা গত কয়েক বছরে অনেকাংশে সফল হয়েছে। প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়ছে। এর মূলে রয়েছে রাজস্ব আয়ের বড় অবদান। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত পাঁচ বছর রাজস্ব আয় গড়ে ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯ হাজার ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৭৫ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে কর মেলাসহ এনবিআরের নানামুখী উদ্ভাবনী উদ্যোগ রাজস্ব আহরণের সাফল্যের পেছনে কাজ করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া উল্লেখিত সময়ে রাজস্ব আয় বাড়ার পাশাপাশি নিবন্ধিত করদাতার করদাতার সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বর্তমানে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে এনবিআর রাজস্ব সংগ্রহ করে এক লাখ ৯ হাজার ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সেটা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ২০ হাজার ৮১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ৭০০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এবছর প্রবৃদ্ধি হয় ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৫৫ হাজার ৫১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের েেত্র বড় সাফল্য আসে। রাজস্ব আয় হয়-এক লাখ ৮৫ হাজার ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়-১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিগত পাঁচ বছরে আহরিত রাজস্বের মধ্যে-আমদানি ও রফতানি পর্যায় (শুল্ক খাত) অবদান ছিল ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে আসে ৩৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ এবং আয়কর খাতের অবদান ৩৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের ল্যমাত্রা রয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
এনবিআরের তথ্যমতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ইলেকট্রনিক আয়কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (ইটিআইএন) সংখ্যা যেখানে মাত্র ১২ লাখ ছিল, সেটা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ৭১ হাজার। সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দ্বিগুণ হওয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে সরকারি চাকরিজীবী করদাতার সংখ্যা। এ ছাড়া কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতে কর্মকর্তা পর্যায়ে চাকরিজীবীদের রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার কারণে সেখানেও ই-টিআইনধারীর সংখ্যা বেড়েছে। সব কিছু মিলে গত এক বছরে করের আওতা দ্বিগুণ বেড়েছে।
আজকের বাজার : এসএস / ওএফ/ ৪ ডিসেম্বর ২০১৮।