পানি আসার তথ্য ভারত আগে দেয়নি কেন: বেলা

ভারত থেকে যে পানি এসে হাওর ভাসিয়ে দিয়েছে, সে পানির আগাম তথ্য আগে দেয়নি কেন এমন প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ভারতের পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশের হাওর ডুবে গেছে। কিন্তু পাহাড়ি ঢলের তথ্য কেন দেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন বাংলাদেশ তুলতে পারে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যখন সর্বোচ্চ মাত্রায় বলে দুই দেশের সরকারের প থেকে বলা হচ্ছে, তখন পানি আসার এই তথ্য বিনিময় উচিৎ ছিল।

শনিবার ২৯ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা’ আয়োজিত ‘হাওরে মানবিক বিপর্যয়: পাশে দাঁড়ান’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে একথা বলেন রিজওয়ানা।

সংবাদ সম্মেলনে ‘পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা’র সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যের সঙ্গে বাস্তব চিত্রের অমিল পেয়েছেন।

তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী হাওরের ৭৫ শতাংশ ধান তোলা হয়েছে। এটা আসলে সঠিক নয়। হাওরে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ধান তুলতে পেরেছেন কৃষকরা। কারণ বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বন্যা হয়েছে। এছাড়া বিগত বছরে ধান কাটার আগ মুহূর্তে বন্যা হয়েছে।

তার দাবি, ৭টি জেলায় গড়ে ৭৫ ভাগ হাওরের বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৬০০টি।

হাওর এলাকায় মাছ ধরা ৩ বছর বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়ে বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা বলেন, মা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা গেছে। এ জন্য সরকারের উচিত আগামী ৩ বছর হাওরের ইজারা না দেওয়া। কারণ ইজারা দিলে যে মাছ থাকবে তাও ধরে ফেলা হবে।

হাওরে মাছের অবস্থা স্বাভাবিক করতে সরকারের ৩ থেকে ৪ বছরের পরিকল্পনা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন বাঁধগুলো ঠিকমতো মেরামত না করায় এই দুর্যোগ দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অসময়ে পানি আসাকেই দায়ী করছেন।

উজান থেকে আসা পানিতে মার্চ মাসের শেষ দিকে অসময়ে তলিয়ে যায় সিলেট অঞ্চলের হাওরগুলো। এতে ব্যাপক ফসলহানির পাশাপাশি দূষণে মাছ ও হাঁসও মারা যায়। সরকারি হিসেবে পাহাড়ি ঢলে অকাল বন্যায় দেশের হাওরাঞ্চলের ছয় জেলায় মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল তিগ্রস্ত হয়েছে; তিগ্রস্ত হয়েছে আট লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার।

আজকের বাজার: আরআর/ ২৯ এপ্রিল ২০১৭