পুঁজিবাজারে দিনভর সাইফুল গুজব, শাস্তি পেলেন আকরাম

পুঁজিবাজার পাড়া মতিঝিলে ছড়িয়ে পড়েছে গুজব।আর এই সব গুজবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারন বিনিয়োগকারী তথা সমগ্র পুঁজিবাজার। বর্তমানে একটা চক্র গুজব ছড়াচ্ছে, বাংলাদেশ কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজের অন্যতম শীর্ষ পোর্টফলিও ম্যানেজার সাইফুল ইসলামকে ছাটাই করা হয়েছে বা পদত্যাগ করানো হয়েছে।
কিন্তু ঘটনা সম্পূর্ন বিপরীত।

চলতি মাসে প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের এক কর্মকর্তাকে ডিএসই সাসপেন্ড করে। পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগে ১৪ দিনের যা ১০ কর্মদিবসের জন্য ট্রেডিং এক্টিভিটিস থেকে বিরত থাকার জন্য জন্য ডিএসই থেকে প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা আকরাম হোসেনকে নির্দেশ দেয়।

সুত্র জানায়, একই সময়ে একই ব্যাক্তির বিও একাউন্টে একই কোম্পানির সমপরিমান শেয়ার ক্রয় এবং বিক্রয় করার কারনে অটো সেল বাই করার অভিযোগে এই সাসপেন্ড করা হয়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ( ট্রেডিং রাইট এন্টাইটেলম্যান্ট সার্টিফিকেট) রেজ্যুলেশনস ২০১৩ আইনের ১৪ এর ২ ধারা অনুযায়ী আকরাম হোসেনের বিরুদ্বে এই ব্যাবস্থা নেয় ডিএসই । এর পুর্বে একই ভুল করার জন্য ডিএসই থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাই তার বিরুদ্বে এমন শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নেয় ডিএসই কতৃপক্ষ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আকরাম হোসেন আজকের বাজারকে বলেন, ভুলবসত একই গ্রাহকের বিও একাউন্টে একই কোম্পানির সমপরিমান শেয়ার একই দরে ক্রয় এবং বিক্রয় হয়ে গেছে। ফলে ডিএসই থেকে এটাকে ননকমপ্লায়েন্স হিসেবে বিবেচনা করেছে। আমাকে শুনানীর জন্য ডিএসই ডেকেছে এবং আমি আমার ব্যাখ্যা দিয়েছি। হয়তো ডিএসই আমার ব্যাখ্যায় সন্তুস্ট হয়নি তাই আমাকে ১৪ দিনের জন্য ট্রেডিং থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।যা চলতি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত কার্যকর হয়।

তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে, আর তাই অনিচ্ছাকৃতভাবেই আমার ভুলটা হয়েছে। যেখানে শেয়ার সংখ্যাও অনেক কম ছিল। এক কোম্পানির শেয়ার ছিল ৮শত আরেকটার ছিল দেড়শত এর মত।

আর পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ঘুরে দেখা যায় এই গুজবকে কাজে লাগিয়েই এক শ্রেনীর মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে আলোচিত পোর্টফলিও ম্যানেজার সাইফুল ইসলামকে নিয়ে।

যাকে কেন্দ্র করে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। বিশেষ করে এদিন অনেকগুলো শেয়ারের এক পর্যায়ে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাজারে এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারীর বিরুদ্ধে আগেও গুজব ছড়িয়ে শেয়ার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আতঙ্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করলেও তারা কম দরে শেয়ার হাতিয়ে নিয়েছে।

পুঁজিবাজারে সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কিছুদিন ধরেই লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছিল কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায়ও ছিল ব্রোকারেজ হাউজটি। এই হাউসের বিনিয়োগকারীরাও অন্যদের তুলনায় বেশ ভাল মুনাফা করেছে বলে তারা জানান। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির নেপথ্যে হাউজটির সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে । বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) হাউজটির লেনদেন খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। এই তদন্ত এখনও চলছে।

একাধিক সুত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইর তালিকাভুক্ত আরও কিছু প্রভাবশালী হাউজ বিশেষ করে একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা ছাড়াও এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারী এই হাউজটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছেন বিভিন্ন মহলে।একধরনের বিনিয়োগকারী নিজের ব্যাক্তিগত সুবিধায় এই গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে। যার ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের পোর্টফলিও ম্যানেজার সাসপেন্ড হয়েছে।

আলোচিত সাইফুল ইসলাম আজকের বাজারকে বলেন, এই গুজবের কোন ভিত্তি নেই, এটা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন। সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এবং পুঁজিবাজারের পরিবেশ নস্ট করার জন্য একশ্রেনীর মানুষ এ গুজব ছড়াচ্ছে। আমাকে কেন সাসপেন্ড করা হবে? আমার বিরুদ্বে তো কোন অভিযোগ নেই।

আজকের বাজার/জাকির/একেএ