প্রিমিয়ার লিগ: টটেনহ্যামকে ৩-১ গোলে পরাজিত করেছে আর্সেনাল

প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে উত্তর লন্ডনের প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহ্যাম হটস্পারকে দাঁড়াতেই দেয়নি আর্সেনাল। রোববার ৩-১ গোলে জয়ী হয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে স্পার্সদের টপকে গেছে গানার্সরা।

মাত্র তিন সপ্তাহ আগে স্পার্স যেখানে টেবিলের শীর্ষে ছিল ঠিক ঐ মুহূর্তে আর্সেনাল ছিল তলানিতে। ৬৭ বছরের ইতিহাসে লিগে এত বাজে শুরু কখনই হয়নি আর্সেনালের। যদিও গ্রীষ্মকালীন দলবদলের বাজারে ছয়জন নতুন খেলোয়াড়কে চুক্তিভূক্ত করে আর্সেনাল প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের হারানোর গৌরব ফিরে পাবার আশায় মাঠে নেমেছিল। এছাড়া ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। নতুন ও পুরোনো মিশেলে ধীরে ধীরে আর্সেনাল তাদের ছন্দ ফিরে পেয়েছে। প্রথম তিন ম্যাচে পরাজয়ের হতাশা কাটিয়ে পরের তিন ম্যাচে ধারাবাহিক জয় তুলে নিয়ে আর্সেনাল এখন টেবিলের ১০ম স্থানে রয়েছে। ৬ ম্যাচে সমান ৯ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পরের অবস্থানে রয়েছে টটেনহ্যাম।

এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর ১২ মিনিটের মধ্যে স্পার্স রক্ষণভাগের ভুলে এমিলে স্মিথ রো গানারদের এগিয়ে দেন। পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং ২৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করার পর বিরতির ১১ মিনিট আগে বুকায়ো সাকার গোলে ৩-০ গোলের লিড পায় স্বাগতিকরা। সন হেয়াং-মিন ম্যাচ শেষের ১১ মিনিট আগে স্পার্সদের হয়ে এক গোল পরিশোধ করলেও নুনো এস্পিরিতো সান্তোর দলের জন্য তা যথেষ্ঠ ছিলনা।

আর্সেনাল যেখানে শেষ তিনটি ম্যাচে জয়ী হয়ে লড়াইয়ে ফিরে এসেছে ঠিক তার বিপরীতে টটেনহ্যাম শেষ তিনটি লিগ ম্যাচে পরাজিত হয়ে পিছিয়ে পড়েছে। এই তিন ম্যাচে তারা ৯ গোল হজম করলেও শোধ করেছে মাত্র একটি।

সর্বশেষ দুই বছর আগে পরিপূর্ণ দর্শকের উপস্থিতিতে উত্তর লন্ডন ডার্বির ম্যাচটিতে দুই দলের কোচ হিসেবে ছিলেন উনাই এমেরি ও মরিসিও পচেত্তিনো। ট্রান্সফার উইন্ডোতে তরুণদের উপরই বেশী জোড় দেয়ার ফল ইতোমধ্যেই পাওয়া শুরু করেছে আর্সেনাল। অন্য যেকোন ক্লাবের তুলনায় এবারের প্রিমিয়ার লিগের দলবদলে সবচেয়ে বেশী অর্থ ব্যয় করেছে গানাররা।

২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান ফুটবলে খেলতে ব্যর্থ হওয়া সত্তেও ২১ থেকে ২৩ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের দলভূক্ত করতে তারা ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে। মিকেল আর্তেতার দুই বছরের মেয়াদে প্রায় সব ম্যাচেই নতুনদের উপর প্রাধান্য দিতে দেখা গেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবারের মৌসুমে নতুন আসা চারজন খেলোয়াড় প্রতিটি ম্যাচেই মূল একাদশে ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাকা ও স্মিথ রো। এই দুজনের সাথে আর্সেনাল দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করেছে।

সাকার ক্রস থেকে স্মিথ রো গোল করে দলকে এগিয়ে দেবার পাশাপাশি কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। দ্বিতীয় গোলটিতে যে ধরনের গতিময় ফুটবল উপহার দিয়েছে আর্সেনাল তা আর্সেন ওয়েঙ্গারের অধীনে ক্লাবটির স্বর্ণালী দিনকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন। স্মিথ রোয়ের সাথে বল আদান প্রদান করে অধিনায়ক অবামেয়াং দারুন ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুন করতে ভুল করেননি। বিরতির আগে আরো এক গোল হজমে নুনোর দল পরাজয়ের ক্ষন গননা শুরু করে দেয়। ৩৪ মিনিটে সাকা স্পার্স গোলরক্ষক হুগো লোরিসকে পরাস্ত করলে ৩-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্সেনাল।

দ্বিতীয়ার্ধেও হ্যারি কেনের ব্যর্থতা বজায় ছিল। গানার্স গোলরক্ষক এ্যারন রামসডেলকে একা পেয়েও তিনি পরাস্ত করতে পারেননি। বেন হোয়াইটের বিপক্ষে একটি পেনাল্টির জোড়ালো আবেদন করেও সফল হতে পারেনি আর্সেনাল। এবারের মৌসুমে এখনো পর্যন্ত কোন গোল করতে পারেননি ইংলিশ অধিনায়ক কেন। প্রথম ৬ ম্যাচে স্পার্সরা মাত্র চার গোল করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে সনই করেছে তিন গোল। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান