ফেনীতে উদঘাটন হলো চাঞ্চল্যকর সাগর হত্যার রহস্য, আটক হয়েছে ৩ জন

ফেনী শহরের রামপুরে শাহনাজ ডেইরি ফার্মের রাখাল মোজাম্মেল হক সাগর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ফেনী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হল চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার অষ্টা গুচ্ছগ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে মোহন প্রকাশ নয়ন (৩০) ও তার স্ত্রী খালেদা আক্তার বৃষ্টি (২৬) এবং তার ভাই রাজন (৩৫)। তবে তারা বর্তমানে ফেনীর রাণীর হাটে মামুন ডেকোরেটরের বাড়িতে থাকে। বৃষ্টির সাথে পরকীয়ার জের ধরে সাগরে খুন করে আটককৃতরা। আজ রোববার সকালে ফেনী পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, পরকীয়ার কারণে এবং টাকার লোভে আটককৃতরা সাগরকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে এবং তার মোবাইল সেটটি নিয়ে যায়। তিনি জানান, বৃষ্টির সাথে সাগরের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলেও সাগরের কাছে কিছু ছবি রয়ে যায়। যা উদ্ধার করতে না পেরে বৃষ্টি তার স্বামী নয়নকে জানায়। পরবর্তীতে নয়ন তার ভাই রাজনকে বিস্তারিত না জানিয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের সাথে সম্পৃক্ত করে। ঘটনার দিন ডেইরি ফার্মের ভেতরে প্রথমে সাগরকে মোবাইলে রক্ষিত ছবি ও ভিডিও চিত্র মুছে ফেলতে বলে খুনীরা। সাগর রাজি না হলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে দা দিয়ে কুপিয়ে সাগরকে হত্যা করে আটককৃতরা।

জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএনএম নুরুজ্জামান জানান, সাগরের মোবাইল সেটে পরকীয়া সম্পর্কের কিছু ছবি ও ভিডিও চিত্র রয়েছে বলে তদন্তে উঠে আসে। এর সূত্র ধরে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে তাদের ধরতে ডিবি পুলিশ বিভিন্ন সময়ে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চাঁদপুরে অভিযান পরিচালনা করে। চাঁদপুর হতে রাজনকে সাগরের মোবাইল ফোনসহ আটক করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে অন্য দুইজনকে ফেনীর রাণীর হাটের ঠিকানা হতে আটক করা হয়।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, একসময় নয়ন ও বৃষ্টি রামপুরে শাহনাজ ডেইরি ফার্মের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাড়া থাকতো। তখন সাগর ও বৃষ্টির মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পুলিশ সুপার জানান, আজ তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। তদন্তে আরও তথ্য বেরিয়ে এলে তা পরবর্তীতে জানানো হবে।

উল্লেখ্য চলতি বছরের ৩০ মে সকালে ফেনী শহরের রামপুরে সাদেক হোসেন পাটোয়ারীর মালিকানাধীন শাহনাজ ডেইরি ফার্মে রাখাল সাগরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সাগরের বাড়ি নেত্রকোনা। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামী দিয়ে ফেনী থানায় মামলা করে নিহতের পরিবার। পরবর্তীতে ২৮ জুন মামলার তদন্তভার দেয়া হয় জেলার গোয়েন্দা শাখাকে। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান