বঙ্গবন্ধু বললেন ‘পীরের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলবো না’ : শাহজাহান মোল্লা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব, কৈশোর ও রাজনৈতিক জীবনের অসংখ্য স্মৃতি বিজড়িত এই জনপদ। ঘটনাবহুল অনেক সোনালি দিন কেটেছে এখানে। শুধু শৈশব স্মৃতিই নয়, ছেলেবেলা লেখাপড়া করেছেন মাদারীপুর ইসলামিয়া হাই স্কুলে। তাই ছাত্র জীবনের কিছু সময়, ছাত্র রাজনীতির স্মৃতিময় বেশ কিছু দিন, রাজনীতির মাঠে, বন্ধুত্ব এবং আত্মীয়তার সুবাদে এই জনপদে তাঁর স্মৃতি রয়েছে নানা অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে।

বঙ্গবন্ধুর স¥ৃতিচারণ করতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মোল্লা জানান, ‘১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শিবচরে দত্তপাড়া তাঁর বড় বোনের বাড়িতে আসেন। ১৩ নভেম্বর সকাল ১০টায় শিবচর হাতির বাগান মাঠে নির্বাচনী জনসভার আগে বঙ্গবন্ধু দত্তপাড়া তাঁর বোনের বাড়ি থেকে নৌকায় এসে শিবচর ডা. আবদুল লতিফ খান (টিপু ডাক্তার)-এর বাড়ির সামনের ঘাটে পৌঁছালে হাজার-হাজার নেতা-কর্মী, ছাত্র-জনতা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

ছাত্রনেতারা বিশাল মিছিলসহকারে তাঁকে হাতির বাগান মাঠের সভামঞ্চে নিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সকাল সোয়া ১০টায় শিবচর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. আবদুল লতিফ খান টিপু ডাক্তারের সভাপতিত্বে জনসভার কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় নেতাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পরে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেন।

বঙ্গবন্ধুর ভাষণ চলাকালে সভাপতি টিপু ডাক্তার তাঁর চেয়ার থেকে উঠে বঙ্গবন্ধুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলেন, ‘বাহাদুরপুর পীর সাহের আপনার ও আমাদের দলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। আপনি তাঁর উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।’ তখন বঙ্গবন্ধু ক্ষিপ্ত হয়ে ‘খামুস’ বলে ধমক দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এ সময় ক্ষণিকের জন্য উপস্থিত লাখো জনতা নীরব হয়ে যায়। সাথে-সাথে বঙ্গবন্ধু আবার ভাষণ শুরু করেন এবং বলেন, ‘তিনি একজন পীর, তিনি আমার ও আমার দলের সমালোচনা করলেও আমি তাঁর সমালোচনা করতে পারি না। আমি একজন পীরের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলবো না।’

তাঁর এমন উদার মনের বক্তব্য শুনে উপস্থিত লাখো জনতা মূহুর্মূহু করতালি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অভিনন্দন জানান। ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত জনতার কাছে তাঁর ভাগ্নে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে উঁচু করে পরিচয় করিয়ে দেন। জনসভা শেষ করে বঙ্গবন্ধু সম্ভবত ভোলার উদ্দেশ্যে শিবচর ত্যাগ করেন।’ খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান