বিপিসির প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে বিইআরসি

বছরের শেষে বাড়তে পারে জ্বালানী তেলের দাম

বিশ্বাবাজারে দর বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। বিগত সাড়ে তিন বছরের বেশি লাভে থাকা বিপিসি এখন লোকসানে তেল বিক্রির অভিযোগ করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে এই অজুহাতে স্থানীয় পর্যায়ে তেলের দাম সমন্বয়ের কথা বলেছে সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে বিপিসি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি’কে। তবে বিইআরসি বলছে সবদিক খতিয়ে দেখেই তবে দাম বাড়ানোর স্বিদ্ধান্ত নেবে সংস্থাটি।

জানা গেছে, বিশ্ববাজারে জালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ডলারের দাম। এর ফলে লাভজনক অবস্থা থেকে এখন লোকসান করছে বিপিসি। অন্যদিকে গ্যাস সংকটের কারণে আসছে গ্রীষ্ম এবং সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে তেলের দাম বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে বিপিসি’র পরিচালক (মার্কেটিং) মীর আলী রেজা আজকের বাজার’কে বলেন, মাসতিনেক ধরে আমরা লোকসানে তেল বিক্রি করছি তাই বিইআরসিকে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আসলে বাড়ানো-কমানো সরকারী নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাজ। তারা যদি দর বৃদ্ধিরও স্বিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে লোকসান অব্যাহত থাকবে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলার থেকে ৮০ ডলারে বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে প্রতি লিটার ডিজেল ২৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মেস অয়েল ১২ টাকা লোকসান হচ্ছে প্রতি লিটারে। আর ডিজেল পূর্বেও দরে ক্রয় করা তাই এখন ৪ টাকা ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু কদিন পরেই সেটি ১০ থেকে ১২ টাকা ক্ষতি হবে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, বিশ্ব বাজারে যখন জ্বালানী তেলের দর কমেছিলো তখন বিপিসি দেশের বাজারে দর কমানোর কোনো চেষ্টাই করেনি। এখন অজুহাত পাওয়ায় দর বাড়ানোর পায়তারা করছে।

বিইআরসি সূত্র বলছে, বর্তমানে বিশ^বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৭০ ডলারে উঠেছে। ফলে গত ডিসেম্বর মাসে বিপিসির লোকসান হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। দেশে তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিপিসির লোকসান আরও বাড়বে।

ক্যাব এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য বিপিসি পায়তারা করছে ঠিকই তবে বিইআরসি সে প্রস্তাবে এখনই সাড়া দেবে না বলে মনে করি। বিগত সাড়ে তিন বছরের অতিরিক্ত লাভ বর্তমানের লোকসানের সাথে সমন্বয় করা হবে। তবে বিশ্ববাজারে যদি তেলের দর না কমে তাহলে চলতি বছরের শেষ ভাগে দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আশংকা রয়েছে।

আরএম