বরিশালে ঈদ উপলক্ষে দেশি শাড়ি, থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি

যে কোন উৎসবে বাঙালীর প্রথম পছন্দ দেশি শাড়ি, থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবি। আর তাই বরিশালে ঈদ উপলক্ষে দেশীয় শাড়ি, থ্রি-পিসও পাঞ্জাবি কিনতে বিপণী-বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যনীয়। নগরীর বড় বড় বিপণী বিতানগুলোতে সরোজমিনে দেখাগেছে, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রং-বেরং-এর শাড়ি ও থ্রি-পিস কিনতে নারীদের উপচে পড়া ভিড়। একই সাথে পাঞ্জাবির দোকানগুলোতেও ভিড় রয়েছে।

নগরীর চক-বাজার বিপণী-বিতানগুলোতে দেশীয় শাড়ি কিনতে আসা গৃহিনী মিসেস রহমান ও রুমা আক্তার ও রুমানা ফেরদৌস জানান, আসন্ন পবিত্র ঈদুল-ফিতরকে কেন্দ্র করে আনন্দের কোন কমতি নেই তাদের মাঝে। তারপরও দাম সহনীয় আর পছন্দের শাড়ি কিনতে পেড়ে খুশি তারা। তারা আরো জানান, বাঙালীর যে কোন উৎসবে নারীর প্রথম পছন্দ শাড়ি ও থ্রি-পিস। আর ঈদ উপলক্ষে তো থ্রি-পিস চাই-ই-চাই। ঈদে শাড়ি আর পাঞ্জাবির আবেদন কোন দিন শেষ হয়ে যাবে না। এবারের ঈদেও এ দুইটি পোশাকই প্রাধান্য পেয়েছে।

নগরীর চকবাজার আড়ং ফ্যাশনে পাঞ্জাবি কিনতে আসা তৌহিদ ও সাইদুর রহমান বলেন, ঈদে পাঞ্জাবি কেনেন না, এমন পুরুষ নেই। পাঞ্জাবির ডিজাইন, ফেব্রিক আর কাটে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে। সুতি পাঞ্জাবির চাহিদাই সব চেয়ে বেশি। এক রঙা পাঞ্জাবির গলায় ও হাতায় ডিজাইন দেখে আব্বার জন্য দুটি পাঞ্জাবি কিনেছি। এখন আমার জন্য দেখছি।

এ বিষয়ে বরিশাল নগরীর শোভা বস্ত্রালয়ের শাড়ি বিক্রেতা বরুন সাহা জানান, এবছর ঈদুল-ফিতরে দেশীয় তৈরি জামদানী ও তাতেঁর শাড়ির উপর নারীদের চাহিদা বেশি। দেশীয় তৈরি জামদানী ও তাতেঁর শাড়ির কথা মাথায় রেখেই এবারের ঈদে হরেক রকমের শাড়ির সমাগম ঘটিয়েছেন আমরা। তবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শাড়ির থেকে এবছর দেশি শাড়ির চাহিদা বেশি। আর দাম সহনীয় বলে বেচা-কেনাও বেশ।

শাড়ি বিক্রেতা বরুন সাহা আরো জানান, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা এবছর ভারত থেকে গুজরাটী শিল্ক, বাহা শিল্ক, মনিপুরি কাতান, মনিপুরি সুতি, পিউর শীল্ক, জর্জেট ও নেটের উপর কাজ করা শাড়ি আমদানী করেছেন। তবে এবারে বেশির-ভাগ ক্রেতারে পছন্দে রয়েছে ঢাকাই জামদানী, টাঙ্গাইল জমদানী, তাঁতের শাড়ি, সফট শিল্ক আর জুট জামদানী। এগুলোর দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এবছর ঈদে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা মূল্যের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে তাদের দোকানে ৫০ হাজার টাকা দামের শাড়িও রয়েছে। শাড়ি ব্যাবসায়ীদের ধারনা এবারের ঈদে তারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী শাড়ি আমদানি করছেন। বিক্রিও ভালো। তবে সামনের দিনগুলোতে বিকিকিনি আরো বাড়বে। পাশাপাশি ক্রেতার সমাগমে ব্যস্ততা বেড়েছে সেলস্ম্যানদের। দম ফেলানোর সময় নেই তাদের। সকাল ৯ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি। সেলস্ম্যানরাও খুশী ক্রেতাদের পছন্দের শাড়ি দিতে পেরে।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে শিক্ষাবিদ প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, আমাদের দেশের ঈদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হচ্ছে পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি ও নারীদের জন্য শাড়ি। শত শত বছর ধরে শাড়িতে মিশে রয়েছে বাঙালিয়ানার ছাপ। উৎসবে, ঘরে-বাইরে যে কোন বয়সের নারী যেন শাড়িতেই অতুলনীয়। তিনি বলেন, শাড়ি এমন একটি পোশাক, যেটি কৈশোর পেরোনো বাড়ির ছোট মেয়েটি থেকে শুরু করে বয়জ্যেষ্ঠ দাদি-নানি সবার পছন্দ। ঈদের দিন একটা শাড়ি না পরলে যেন ঈদটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান