বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণ

বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সকাল ৯টায় টিএসসি সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়। ইউনেস্কো কর্তৃক ‘মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান হচ্ছে ‘নির্মল করো মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’।

বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ এই মঙ্গল শোভাযাত্রায় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, রেজিস্ট্রার মি. প্রবীর কুমার সরকার, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী সহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সর্বসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।

পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগতরা কোন ধরনের মুখোশ পরেনি এবং ব্যাগ বহন করেনি। তবে চারুকলা অনুষদের প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেউ ভুভুজিলা বাঁশি বাজায়নি। এছাড়া, ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য যানবাহন ও মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ছিল।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে সকলের সুখ, শান্তি, আনন্দ, সমৃদ্ধি ও অনাবিল মঙ্গল কামনা করেছেন।

তিনি বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ ও চিরন্তন প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। আবহমান কাল থেকে বাঙালি জাতি নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রীতি-নীতি ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করে আসছে। পহেলা বৈশাখ সকল ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, পেশা ও বয়সের মানুষের মাঝে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষের উৎসব একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব। নববর্ষের প্রেরণায় বাঙালির মধ্যে উদার মানবিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা নতুনভাবে জাগ্রত হয়, মানুষে মানুষে গড়ে ওঠে সাম্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি।

উপাচার্য বলেন, অতীতের গ্লানি, দুঃখ, জরা মুছে অসুন্দর ও অশুভকে পেছনে ফেলে নতুন কেতন উড়িয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ সকলের জীবনে আরও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। ৪র্থ শিল্পবিপ্লব প্রসূত সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সকল ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশ নবউদ্যোমে আরও এগিয়ে যাবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা, বাণিজ্য, অর্থনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জন করে বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। সাফল্য, উন্নয়ন ও অগ্রগতির এই ধারা নতুন বছরেও অব্যাহত থাকবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান