বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় গড়ে তুলতে পারলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘এটা প্রমাণিত, আমরা যদি বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় গড়ে তুলতে পারি তবে বাংলাদেশে দারিদ্র্য থাকবে না, দারিদ্র্য পুরোপুরি নির্মূল হবে এবং আমরা এটি করতে পারি।’

শেখ হাসিনা ৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় সমবায় পুরস্কারপ্রাপ্তদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এ বছরের দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে সমবায় আন্দোলনের সাথে জড়িতদের বড় ভূমিকা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আপনারা সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবেন, আমরা সেটাই চাই, আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ চাই।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনা দেশের মানুষ যত বাধাই আসুক না কেন সামনে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী সমবায় আন্দোলনে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাদের উত্পাদিত পণ্য বিক্রির জন্য বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ করতে বলেন।

‘যদি আমরা বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ না করি তবে আমরা আমাদের পণ্যগুলো বিক্রি করতে সক্ষম হব না এবং এটি সকলের মধ্যে নিরুৎসাহ এনে দেবে, সুতরাং বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সমবায়গুলোতে জড়িত সকলকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন যাতে মানুষ তাদের উত্সাহ না হারায়। ‘বিপণনের ব্যবস্থাটি বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে এবং এটি করা উচিত,’ বলেন তিনি।

সরকার জাতির পিতার নীতিতে বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে দেশকে গড়ে তোলা যায়।

তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আন্তরিকতা এবং দায়িত্বের সাথে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করেন।

‘তাত্ক্ষণিকভাবে বড় মুনাফায় প্রবৃত্ত হবেন না, এটিকে (সমবায়) স্থায়ী এবং লাভজনক সংস্থায় পরিণত করুন যাতে সকল সদস্য তাদের লাভের অংশ পেতে পারে,’ তিনি বলেন।

এই প্রসঙ্গে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে কাজ করার কথা বলেন যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী সমবায় আন্দোলনে আরও বেশি নারীর জড়িত থাকার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী এবং তাদের এই সমবায় আন্দোলনে আরও বেশি করে অংশ নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘যত বেশি নারী বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত হবে তত বেশি দুর্নীতি নির্মূল হবে।’

দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ যাতে সেখান থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেজন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।

‘আমরা গ্রামাঞ্চলে সমস্ত নগর সুবিধার ব্যবস্থা করব যাতে সেখানে বসবাসরত মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবন পেতে পারে,’ তিনি বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য সমবায়গুলো হাতিয়ার। বঙ্গবন্ধু সকল ক্ষেত্রে সমবায় ভিত্তিক উত্পাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাপনার প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্জ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এর আগে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে জাতীয় সমবায় পুরস্কার প্রদান করেন।