বহুল প্রতিক্ষীত পায়রা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়াকাটাকে সরাসরি সড়ক পথে সংযোগকারি ‘পায়রা সেতু’র উদ্বোধন করেছেন। আর এর মাধ্যমে উন্নয়নের মহাসড়কে আরও একটি স্বপ্ন পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর।
ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার খরস্্েরাতা পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই সেতুর উদ্বোধন করেন।
সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দর পর্যন্ত সড়ক পথ ফেরিবিহীন হলো। এরআগে বরিশাল থেকে মহাসড়ক পথে কুয়াকাটা পৌঁছাতে হলে ৬টি স্থানে ফেরি পার হতে হতো।
আওয়ামী লীগ সরকারের ১ম মেয়াদে সর্বপ্রথম লাউকাঠি নদীতে পটুয়াখালী সেতু নির্মাণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে কীর্তনখোলা নদীর উপর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু (দপদপিয়া সেতু), খেপুপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর উপর শহীদ শেখ কামাল সেতু, হাজীপুরে সোনাতলা নদীর উপর শহীদ শেখ জামাল সেতু এবং মহিপুরে খাপড়াভাংগা নদীর উপর শহীদ শেখ রাসেল সেতু নির্মিত হয় এবং সর্বশেষ এই পায়রা সেতু নির্মিত হলো।
চার লেনের এই পায়রা সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার, প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। জলতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, সেতুর উভয় পারে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি খুঁটি বা পিলার ব্যবহার করা হয়েছে।
এ কারণে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে না। এ ছাড়া এই সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর (সেতুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণব্যবস্থা)’ স্থাপন করা হয়েছে। এতে বজ্রপাত, ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হলে আগেভাগেই সংকেত পাওয়া যাবে। আধুনিক টোল প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। রাখা হয়েছে উভয় পাশের্^ যানবাহনের ওজন পরিমাপের ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার ২০১২ সালের মে মাসে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। নির্মাণ কাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।