বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আরব আমিরাতের ইতিবাচক সাড়া

আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মাদ বিন জায়াদ আল নাহিয়ান আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি এবং বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন।
ওয়্যাল প্যালেস প্রাসাদে আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশ সফরেও আসতে পারেন এবং আরব আমিরাতের শ্রমবাজারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়টি খুব ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই বিবেচনা করবেন।’
দিনব্যাপী প্রধানমন্ত্রীর নানা অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে শহীদুল হক বলেন, আমিরাতের শ্রমবাজারে বাংলাদেশীদের অন্তর্র্ভুক্তির বিষয় নিয়ে আরব আমিরাতের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন, যাতে করে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করা যায়। বৈঠকে আরব আমিরাত সরকারের নীতিসমূহ বাস্তবায়ন বিষয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরব আমিরাতের যুবরাজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থপতি শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের একটি আলোকচিত্রও উপহার দেন।
যুবরাজ প্রধানমন্ত্রীকে তাদের সাপ্তাহিক মজলিসে নিয়ে যান এবং সেখানকার নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাঁকে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রায় আধাঘন্টা সময় মজলিসে উপস্থিত থেকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, বলেন পররাষ্ট্র সচিব।
শহীদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও যুবরাজের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হওয়ার বিষয়টিও তাকে অবহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সফলভাবে প্রত্যাবাসনে আরব আমিরাতের সহযোগিতা কামনা করেন।
যুবরাজ এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাঁর দেশের বাংলাদেশের পাশে থাকার সদিচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য আমিরাত সরকার আরো নতুন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তিনি বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পে সহযোগিতারও আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
শহীদুল হক বলেন, এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি ন্যাশনাল সেন্টারে দুবাইয়ের শাসক শেখ আহমেদ ডালমুখ আল মকতুম’র সঙ্গেও এক অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হন এবং সেখানেও উভয়ের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশের শ্রম রপ্তানীর বিষয়টি আলোচিত হয়।
শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের একটি অংশ দুবাইয়ের বাহার প্রাসাদে দুবাই মাতা এবং দেশটির স্থপতি শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের স্ত্রী শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারাক আল কেতবী’র সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে তাদের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এবং দুবাই মাতা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এনজিওসহ নানা বিষয়ে জানার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশে নারী উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, দুবাইয়ের নারীদের এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু শিক্ষণীয় রয়েছে। বিশেষ করে ইসলামের নীতি আদর্শ মেনে চলে তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে।