ভেঞ্চার ক্যাপিটাল খাতে বড় বাধা স্ট্যাম্প ডিউটি

আর্থিক খাতে নতুন উদ্যোগ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। বিভিন্ন দেশে পুজিবাজারের পরিধিভুক্ত বিকল্প বিনিয়োগ ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মাত্র কিছুদিন হলো বাংলাদেশে এর পথচলা শুরু হয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল খাতের উন্নতিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মসলিন ক্যাপিটাল। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন ওয়ালি-উল মারুফ মতিন। পুজিবাজারে দীর্ঘ পথচলায় রয়েছে তার বিস্তৃত অভিজ্ঞতা। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সার্বিক দিক নিয়ে দৈনিক আজকের বাজার ও আজকের বাজার টেলিভিশনের (এবি টিভি) সাথে আলোচনা করেছেন তিনি। আলোচনার অনুলিখন তাঁরই ভাষায় দৈনিক আজকের বাজারের পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।

বাংলাদেশে এখনো ভেঞ্চার ক্যাপিটালের শুরুর পর্যায় চলছে। ভেঞ্চার কথাটার সাথেই অংশীদারিত্বের বিষয়টি চলে আসে। এখনো পর্যন্ত মসলিন ক্যাপিটাল একাই এগোনোর চেষ্টা করছে। আর যেকোনো জিনিসই প্রথম শুরু করতে হলে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমরাও সেগুলো ফেস করছি।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সমস্যা
ভেঞ্চার ক্যাপিটালের এখন পর্যন্ত প্রধান সমস্যা হচ্ছে অ্যাওয়ারনেসের অভাব।  যে ধরনের জনসচেতনতার দরকার, সেটাও নেই। আমাদের দেশে ফান্ড বলতে বোঝানো হয় শেয়ারবাজারের শেয়ার অথবা ব্যাংকের লোন। এ দুটোর বাইরে আমরা চিন্তা করতে পারি না। অন্য দশটা দেশের মতো যখন আমরাও ব্যাংক থেকে ফান্ড রিচ করতে যাই, তখন বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। যেমন এর গ্যারান্টি কী? কোলেটরাল কী? ইন্টারেস্ট কী? কিন্তু আমরা যে কোনো ইন্টারেস্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি না বা কোনো লোন নিচ্ছিও না, দিচ্ছিও নাÑ এই কনসেপ্টটাকে এখনো যে লেভেলে পৌঁছানো দরকার সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আর এই সচেতনতার জন্য সরকারকে বেশি এগিয়ে আসতে হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ
সরকারকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হবে। কারণ, সরকারের যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ বা যে ডেভেলপমেন্টগুলো হচ্ছে, এগুলোর সঙ্গে ভেঞ্চার ক্যাপিটালটা খুবই দরকারি জিনিস। এটা ফুয়েল হিসেবে কাজ করবে। ব্যাংকগুলো সাধারণত ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের কথা বলছি না। আমরা একদম মূলধনের কথা বলছি। সেটা সাধারণত লোন দিয়ে হয় না। জাপান বলেন আর আমেরিকা বলেন, এই উন্নয়নগুলো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ছাড়া হয় না। ভেঞ্চার ক্যাপিটালটা কখনোই লোনের মতো না।

আমরা যে ফান্ডটা তৈরি করব, এটা কোনো লোন থেকে নেওয়া না। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল মানে ইক্যুইটি শেয়ার। আমরা এটা দিচ্ছি নন-স্টক কোম্পানিকে। যেসব কোম্পানি বা উদ্যোক্তা আসছেন; তাঁদের স্কিল আছে, মেধা আছে, ইমোশন আছে এবং চলমান উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাঁদের এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা আছে, তাঁদের সাপোর্ট দেওয়া এই মুহূর্তে খুবই জরুরি। তাই তাঁদের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল দেওয়া হয়।

আমাদেরকে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন তিন ধরনের ফান্ড রিচ করার জন্য পারমিশন দেয়। এগুলো হচ্ছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুইটি আর ইমপ্যাক্ট ফান্ড। টেক্সটবুক অনুযায়ী এই সবগুলোই প্রাইভেট ইক্যুইটি মেনটেইন করে। আরেকটা বিষয়, প্রাইভেট ইক্যুইটির কোনো আইপিও হবে না।

যেসব কোম্পানির বয়স দুই বছরের কম, তাদের গ্রিন ফিল্ড বলা হয়। আর ভেঞ্চার ফান্ড পাওয়ার জন্য এরা যোগ্য। তবে একটা সোশ্যাল বেনিফিট থাকতে হবে। সেই সোশ্যাল বেনিফিটটা পরিমাপযোগ্য হতে হবে। নির্ধারিতভাবে বলতে হবে, এতগুলো মানুষকে উপকার করা হচ্ছে বা এতগুলো গাছ লাগানো হয়েছে। আর আমাদের কোম্পানি মসলিনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রতিটি কাজ হবে পরিবেশবান্ধব।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে বিষয়টি আলোচনায় আছে, এটি কিন্তু অনেক বড় একটা বিষয়। এখন দেখা যাচ্ছে, ছোট ছোট অনেক ছেলেমেয়ে (মাত্র এসএসসি বা এইচএসসি শেষ করেছে) অনেক বড় বড় জিনিস তৈরি করে ফেলছে। একটা রোবট তৈরি করে ফেলছে। এগুলো দেখা যায় তাদের কেউ সেভাবে শেখায়নি। নিজে নিজে ইউটিউব দেখে শিখে নিয়েছে। এখন এই ছেলেটি বা মেয়েটিকে বাহবা তো দিতেই হবে; সাথে অর্থনৈতিক সাপোর্টও দিতে হবে। ওদের সৃষ্টিগুলোকে লালন-পালন করে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে হবে।

আইটি স্টার্টআপকে সহায়তা দিতে হবে
বর্তমানে আইটি সেক্টরে যেসব স্টার্টআপ কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের আন্ডারে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, তাদের হাত ধরে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্বও নেওয়া হবে। এরপর যখন এটা লাভজনক পর্যায়ে যাবে, তখন সে ইচ্ছা করলে আমাদের শেয়ারটা ফেরত দিতে পারবে। তবে অবশ্যই সমকালীন ভ্যালুতেই ফেরত দিতে হবে। আমরাও তো ব্যবসায়ী। আর তারও অরাজি হওয়ার কারণ নেই। তাকে গ্রো টাইমে তো আমরা হেল্প করেছি। এরা যদিও ছোট উদ্যোক্তা। তবে বাংলাদেশে ছোট্ট উদ্যোক্তাদের ফেল করার হার খুব কম। এর অন্যতম উদাহরণ মাইক্রো ফাইন্যান্সগুলো।

স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগে মসলিন সিরিয়াস
হেলথ প্রজেক্ট নিয়ে বলতে গেলে স্পষ্টভাবেই বলতে হবে, আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি এখনো সেভাবে হয়নি। আরও ভালো হতে পারত। আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগেও দেখা যেত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ার জন্য আশপাশের দেশগুলো থেকে মানুষ ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছে। কিন্তু এখন আমাদের দেশ থেকে উল্টো চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন ১০ হাজার লোক কলকাতায় যায়, এটা একটা লজ্জাজনক এবং ভীতিজনক ব্যাপার।

আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা আরও উন্নত হলে কারাও বাইরে যেতে হতো না। সে ক্ষেত্রে আমাদের একটু লাফিয়ে এগোতে হবে। যেমন জাপানে অনেক সস্তায় হার্ট প্রতিস্থাপন করা যায়, যেটা আমাদের দেশে করতে হলে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাবে। এ ছাড়া আমাদের দেশে ভালো ল্যাবও নেই। সব মিলিয়ে একযোগে সব ঠিক করতে গেলে বেগ তো একটু পেতেই হবে। তবে আমাদের জাপানিজ পার্টনারদের সাথে কথা হয়েছে। তাদের যে টেকনোলজি আছে, ওগুলো আমাদের দেশে আনা যায় কি না।

আমাদের দেশে যেসব বড় রোগ রয়েছে যেমন- ডায়াবেটিক ক্যাপিটাল কিংবা হার্টের ট্রিটমেন্টের জন্য যাতে বাইরে যেতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বরং বাইরের মানুষ আমাদের দেশে আসুক। যদি আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারি, তবে অবশ্যই বাইরের দেশের মানুষ এ দেশে সেবা নিতে আসবে।

আমরা মসলিন ক্যাপিটাল, হেলথ সেক্টরের টেকনোলজিতে বিনিয়োগে সিরিয়াস। এখন যে সময় চলছে, এটাকে বলছি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফোর্থ রেভল্যুশন। হয়তো এ বছরের শেষেই একটা কমার্শিয়াল উৎপাদন পেতে পারি। তা হচ্ছে চশমায় ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে। চশমার মাধ্যমেই ইন্টারনেটে টিভি চ্যানেল দেখা বা যাবতীয় কাজ করা যাবে। অলরেডি এর ল্যাবরেটরি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে; দ্রুতই চলে আসবে। অর্থাৎ, এখন যা কিছুই করা হোক, টেকনোলজি বেইজ করতে হচ্ছে। এমনকি চা-কফি খাওয়াও টেকনোলজি বেইজ হয়ে গেছে।

স্যাটেলাইট সিটি স্যাটেলাইট সিটি সম্পর্কে আলোচনার আগে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা জরুরি, তা হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং সমাধান রয়েছে এই পপুলেশনে। যে পাঁচটি দ্বীপরাষ্ট্র রয়েছে, এগুলো বাদ দিলে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। এ অবস্থায় আমরা চাই না যে জমি কমে যায় বা খাল-বিল ভরে যায়। তবে মানুষকে তো থাকতে হবে। আপনারা জানেন, মডার্ন, পরিবেশবান্ধব, হাইটেক আবাসন প্রকল্পের নামই স্যাটেলাইট সিটি। এটার ডিজাইন, বিল্ডিং মেকিং থেকে শুরু করে বসবাসের উপকরণÑ সবই টেকনোলজি বেইজ হতে হয়।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুইটি সব সময়ই একটু সময় নিয়ে করতে হয়। লং রানের ব্যাপারটা এর মধ্যে থাকে। আমরা এখন এটাকে ভিজ্যুয়ালাইজ করছি। চিন্তা করছি ৫ বছর বা ১০ বছর পর কোন টেকনোলজিটা আসবে, সেটা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পার্টনাররাও এটি নিয়ে ভাবছে। সুতরাং এটা রাতারাতি হওয়া সম্ভব না।

বাজেটে প্রত্যাশা

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের লাইসেন্স যারা পেয়েছে, তারা সমবেতভাবে চেষ্টা করছে এনবিআরের কাছে বা সরকারের কাছে বিষয়টি পৌঁছানোর জন্য। এই সেক্টরের বড় হার্ডল হচ্ছে ফান্ড তৈরিতে স্ট্যাম্প ডিউটির ব্যাপার আছে।  এই ফান্ড আমাদের কোম্পানির নামে দিতে হবে না। এটা হবে একটা ট্রাস্ট ফর্মে। ট্রাস্ট ফর্ম করতে গেলে ব্যবসা শুরু করার আগে ২ পার্সেন্ট স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে; এটা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জন্য কোনোভাবেই ব্যবসাবান্ধব নয়। এটা জমিজমা রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের বেলায়ও এটা করা হয়েছে। বাজেট সামনে রেখে আশা করছি এটা থাকবে না।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড যেমন কিছু কর সুবিধা পেয়ে থাকে, ও রকম কিছু সুবিধা আশা করছি। যেমন আমাদের এখানে ৩৫ পার্সেন্ট ফান্ডের ইনকামের ওপর একটা ট্যাক্স আসে; অ্যাকচুয়ালি ফান্ডটা তো সবার মিলে। এটা তো নিজের জন্য ফান্ড নিয়ে ব্যবসা করছে না। আল্টিমেটলি ফান্ডে যারা ইনভেস্ট করছে তাদের। সুতরাং তাদের কাছে যখন যাওয়া হচ্ছে, তখন তো তারা ডিভিডেন্ট বা ইনকামের ওপর ট্যাক্স দিচ্ছেই। এর ওপর এখানে যদি আলাদা করে ট্যাক্স দিতে হয়, তাহলে বিনিয়োগ পাওয়াটাই দুরূহ হয়ে যায়। তাই আমরা সরকারের কাছে আশা করছি স্ট্যাম্প ডিউটিটা ছাড় দেবে।

আমরাও ট্যাক্স দেব। তবে ব্যবসা শুরুর আগে দিতে গেলে একটু হোঁচট খেতে হবে। এটা এনবিআর বা সংশ্লিষ্ট যারা আছে, তারাও বোঝে। ইন আ লং টাইম দেশের রেভিনিউ ডিপার্টমেন্টে আমরা কিন্তু বড় একটা অঙ্কের ট্যাক্স দেব। তবে শুরুতে একটু রিল্যাক্স চাচ্ছি। প্রথম দিকে অন্তত তিন-চার বছর এই সুযোগটা দেওয়া উচিত। পুঁজিবাজারের  সুশাসন লাগবে শেয়ার মার্কেটে সাধারণত যে ভুলগুলো হয়ে থাকে তা হচ্ছে, ইনডেক্স বাড়লেই আমরা খুশি হয়ে যাই। এত অল্পতে খুশি হলে চলবে না। শেয়ারবাজারেও বেশ কিছু ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দরকার আছে। এখানে হতাশার বিষয় হচ্ছে, যেসব নতুন প্রোডাক্ট আমাদের এখানে আসার কথা ছিল (পৃথিবীর সব দেশেই আছে), অথচ আমাদের এখানে নেই। আর এটি কিন্তু সরকারের ব্যর্থতা নয়। এটা প্রাইভেট সেক্টরের ব্যর্থতা।

উদাহরণ হিসেবে ইটিএফের কথা বলা যায়। কিছুদিন আগে এই ইটিএফ নিয়ে অনেক আলোচনা বা লেখালেখি হয়েছে। দুই বছর হয়ে গেল এখনো এটি আসেনি। ইটিএফের জন্য যে রুলস দরকার, কর্তৃপক্ষ সেটা করে বসে আছে। কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর থেকে যারা আসছে, তারা এটি আনতে পারেনি।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে বিদেশিদের অংশগ্রহণ। বিদেশিরা আসতে পারে, তবে পুরোপুরি তাদের হাতে তুলে না দিয়ে অংশীদার হিসেবে রাখতে পারি। তবে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের জন্য যে পার্টনারশিপগুলো আসা দরকার, সেটি দেশের ভেতর থেকে আসা উচিত বলে আমি মনে করি। এবং এটা সম্ভব।   আমাদের স্টক এক্সেচেঞ্জের যে ৬০ পার্সেন্ট শেয়ার বিক্রি হবে, এর একটি বড় অংশ মনে হয় ব্যাংকিং সেক্টর, ইনস্টিটিউশন এবং হাই নেটওয়ার্ক পিপলদের নেওয়া উচিত। বিদেশিদের প্রতি আমাদের আস্থা পরে। আগে দেশি বিনিয়োগকারীদের থেকে আশা করি। আর ইনডিপেনডেন্ট ডিরেক্টরদের ব্যাপারে বলা যায়, তাঁরা হচ্ছেন ইনডিপেনডেন্ট অব এভথিং। অনেকেই আছেন, যাঁরা ভেতর থেকে তো দূরের কথা, দূর থেকেও স্টক এক্সচেঞ্জ দেখেননি।

একজন স্টক ব্রোকারের জন্য সকালে যাওয়ার জায়গা হচ্ছে স্টক এক্সচেঞ্জ, বিকেলের আড্ডার জায়গা হচ্ছে স্টক এক্সচেঞ্জ এমনকি রাতে ঘুমানোর সময়ও স্টক এক্সচেঞ্জ মাথায় রাখতে হবে। অর্থাৎ, সার্বক্ষণিক স্টক এক্সেচেঞ্জ মাথায় থাকতে হবে। আর যত দিন ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন না হবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের বাজারকে ম্যাচিউরড বলা যাবে না। স্টক এক্সচেঞ্জের ম্যাচুরিটির জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন দরকার, নতুন প্রোডাক্ট দরকার, বন্ড মার্কেট দরকার। এগুলো এখনো কিছুই হয়নি। কয়েকটা মিউচ্যুয়াল ফান্ড আর শেয়ার ছাড়া কিছুই নেই। এর মধ্যে যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো রয়েছে, এগুলোর অধিকাংশই ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এরপর নতুন ফান্ড কোথায়? আবার সেই খরা দেখা দেবে। তা ছাড়া বিভিন্ন কারণে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতিও মানুষ দিনে দিনে আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই বলা যায় লম্বা সময়ের জন্য কেউ টিকবে না। এ জন্য সুশাসনটা লাগবে। আর সুশাসনের জন্য লাগবে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন।

বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
ঝুঁকি কখনো এক ধরনের হয় না। যেমন একজনের ঝুঁকি আরেকজনের সাথে মিলবে না। ঠিক তেমনি একজনেরই সকালের ঝুঁকির সাথে বিকেলের ঝুঁকির মিল থাকে না। এটা সময় ও সিচ্যুয়েশন অনুযায়ী আসে। এটি নিজেই ভালো বোঝা যায়। যিনি বুঝবেন না তাঁর শেয়ারবাজারে না আসাটাই বেটার। বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র আছে। সেখানে করুক। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে। সেই ঝুঁকিটা বুঝতে হবে এবং ঝুঁকি নিতে হবে।

 

ওয়ালিউর মারুফ মতিন
এমডি মসলিন ক্যাপিটাল