বাংলাদেশ-ভারত একত্রে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ও ভারত একসাথে উদযাপন করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি আজ বুধবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল উন্মোচনের পরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ হিসাবে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তারাও রক্ত দিয়েছে। আমরা দু’দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। সমস্যা আছে, তবে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার ঢাকা সফর নিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা উৎপাদনের সঙ্গে ভারত যুক্ত রয়েছে। এজন্য আমরা অফার করব, আমাদের এখানেও যদি ট্রায়ালের সুযোগ থাকে, করার ব্যবস্থা করতে। অক্সফোর্ডেরটার কোম্পানির সঙ্গে লন্ডন মারফত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যে ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বা চালু হচ্ছে, তা পাওয়ার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে। মন্ত্রী বলেন, ভারতে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তা বাংলাদেশ কিভাবে পেতে পারে তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিষয়ে প্রবাসীদের ভিসা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনার কারণে বিদেশে অনেক প্রবাসী সমস্যায় রয়েছেন। তবে আপদকালীন সময়ের অবসানে এ অবস্থা থাকবে না। আর ভিসার মেয়াদ নিয়ে তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। বিনা খরচে ভিসা অটোমেটিক রিনিউ হবে।

দেশে আটকাপড়া প্রবাসীদের ফিরে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, করোনা সংকট কিছুটা কেটে যাওয়ায় আটকা পড়া প্রবাসীরা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে কয়েকটি দেশ নতুন-নতুন আইন জারি করে কিছুটা সমস্যা করছে। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের নতুন আইন অনুযায়ি সে দেশে ফিরতে শুধু ভিসার মেয়াদের সাথে-সাথে সংশ্লিষ্ট কফিলের অনাপত্তি থাকতে হবে। নতুন এই আইনের কারণে কিছু প্রবাসীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভিসার মেয়াদ থাকার পরও তারা সেদেশে ফিরে যেতে পারছেন না। তবে এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের উপর আদালতের রায় কার্যকর করার প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, ১৫ই আগস্টের ঘটনার ৫ খুনি এখনো দেশের বাইরে পালিয়ে আছে।

এর মধ্যে দুইজনের অবস্থান ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের একজন আমেরিকা ও অপরজন কানাডায় আছেন। এদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। বাকি তিনজনের অবস্থান এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে এদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য বিদেশে বাংলাদেশের সকল মিশনকে বলা হয়েছে। তিনি এদের অবস্থান জানাতে দেশ-বিদেশের সকলের প্রতি আহবান জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান