বার্সেলোনাকে পরাজিত করে আবারো শীর্ষে উঠে এলো রিয়াল মাদ্রিদ

মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকোতে জয় তুলে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। রোববার ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সেলোনাকে ২-০ গোলে পরাজিত করে আবারো লা লিগা টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। শিরোপা দৌঁড়ে ঠিকে থাকার লড়াইয়ে এর থেকে ভাল জয় আর কিছুই হতে পারেনা। ভিনসিয়াস জুনিয়রের ডিফ্লেকটেড ফিনিশ ও ইনজুরি টাইনে মারিয়ানো দিয়াজের গোলে মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়। ম্যানচেস্টার সিটির কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পরাজয়ের পর বার্সাকে এই ম্যাচে হারানোর মধ্য দিয়ে মাদ্রিদ যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ বস জিদান বলেছেন, ‘সপ্তাহটা সত্যিই খুব কঠিন ছিল। পুরো সপ্তাহ জুড়েই আমরা নিজেদের এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছি। এখন মনে হচ্ছে সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি।’

এই জয়ে বার্সেলোনার থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে ৫৬ পয়েন্টসহ টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মাদ্রিদ। কালকের ম্যাচে কিকে সেতিয়েনের বার্সেলোনা কোনদিক থেকেই মাদ্রিদকে টপকাতে পারেনি। এ সম্পর্কে সেতিয়েন বলেছেন, ‘মূল কথা হচ্ছে বলের সাথে সাথে আমরা নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। একটি নার্ভাস সময়ে আমরা গোল হজম করেছি।’ প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির জোড়ালো শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ অধিনায়ক সার্জিও রামোসের আনন্দটা ছিল একটু বেশী। শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে রামোস যেভাবে জয়টা উদযাপন করেছে তাতে মনে হয়েছে এই ম্যাচটা মাদ্রিদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা শুধুমাত্র চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে আনা নয়, বরং শিরোপা দৌঁড়ে কিছুটা হলেও বার্সেলোনাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া।

এর আগে শনিবার ম্যাচের আগে জিদান বলেছিলেন মে মাসে শিরোপা কার ঘরে যাবে সেটা এখনো ঠিক হয়নি। কিন্তু বার্সেলোনা যদি ম্যাচে জয়ী হয়ে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে যায় তবে সেই ব্যবধানটা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ম্যাচের শুরু থেকে বার্সেলোনা অবশ্য আক্রনমভাগে রিয়ালের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে ছিল। বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে বলেছেন, সান্তিয়াগোতে আমি এ পর্যন্ত যে মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছি তার মধ্যে কালকের দলটি প্রথমার্ধে সবচেয়ে বাজে দল ছিল। আমি এটাকে সমালোচনার চোখে দেখছি না। আমাদের দলেও সমস্যা আছে। কিন্তু আমরা তাদের ভুলের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। ম্যাচের শুরুতেই বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে দুই দলের দুই ফুল-ব্যাক ডানি কারভাহাল ও জোর্দি আলবা হলুদ কার্ড দেখেন। ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য মাঠে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বামদিক থেকে ভিনসিয়াসের কল্যাণে মাদ্রিদ নিয়মিত ভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নিচ্ছিল। বিপরীতে বার্সেলোনার পাস ছিল অত্যন্ত ধীর গতির। তারপরেও বেশ কিছু সুযোগ তারা সৃষ্টি করেছিল। আলবার কাটব্যাক থেকে আতেঁয়া গ্রিজম্যানের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এরপর কুর্তোয়ার দুটি দুর্দান্ত সেভে মাদ্রিদ রক্ষা পায়।

বিরতির পর বার্সেলোনার ধীর গতির সুযোগে মাদ্রিদ ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। ইসকোর হেড বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করলেও লাইনের উপর থেকে পিকে তা ক্লিয়ার করেন। আরটুরো ভিডালের ভুল পাস থেকে প্রাপ্ত বলে করিম বেনজেমার ভলি বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৬৯ মিনিটে ভিডালের পরিবর্তে মাঠে নামেন মার্টিন ব্রেথওয়েইট। ৭১ মিনিটে টনি ক্রুসের সহায়তায় পোস্টের খুব কাছে থেকে ভিনসিয়াস মাদ্রিদকে এগিয়ে দেন। এক গোলে পিছিয়ে থেকে বার্সেলোনা কিছুটা আগ্রাসী হয়ে উঠে। মেসির শট আটকে দেন রাফায়েল ভারানে। ক্যাসেমিরোকে ফাউলের জন্য মেসিকে হলুদ কার্ড দিয়ে সতর্ক করা হয়। ইনজুরি টাইমে মারিয়ানোর গোলের মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান