বিএনপি লাশ নিয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করছে: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

বিএনপি জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করছে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘ব্যক্তি জিয়ার সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই, তবে ইতিহাসের বিকৃতি চাই না। চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই অথচ সেখানে শ্রদ্ধা জানাবেন, ইতিহাসের এমন বিকৃতি হতে দেয়া যায় না।’

আজ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধে নৌ -কমান্ডোদের বীরত্বগাঁথা ‘অপারেশন জ্যাকপট’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় জিয়াউর রহমানের লাশ কবরে থাকলে ডিএনএ টেস্ট করে প্রমাণ করতে বিএনপি’র প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সাধারণ কোন নাগরিক ছিলেন না, তিনি যেভাবেই হোক রাষ্ট্রপতি ছিলেন। কাজেই তার সেসময়ের কোন ছবি থাকবে না, এটা হতে পারে না।’

মোজাম্মেল হক বলেন, সংসদ ভবনের আশপাশ থেকে জিয়ার তথাকথিত মাজারসহ মূল নকশা বহির্ভূত সকল স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি সংসদে বহুবার বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি সংসদ ভবন এলাকা থেকে এসব নকশা বহির্ভূত স্থাপনা সরিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংসদ ভবনকে মূল নকশায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়া নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের প্রশ্ন তোলা সম্পর্কিত সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রশ্নের জবাব দেয়ার প্রয়োজন মনে করি না।’ এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান (যিনি ‘৭১ সালে ১৯ মার্চে গাজীপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন আর মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আহবায়ক ছিলেন) এবং গাজীপুরের বিএনপি নেতাদের কাছ থেকেই জেনে নিতে মির্জা ফখরুলকে পরামর্শ দেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী। পাশাপাশি মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং তার পরিবারের মুক্তিযুদ্ধের সময় কি ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখতেও মন্ত্রী সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন।

মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নৌযুদ্ধের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অপারেশন ছিল ১৯৭১ সালের ‘অপারেশন জ্যাকপট’। এতে আকাশবাণীর গানের সঙ্কেতের মাধ্যমে বিভিন্ন বন্দরে একযোগে অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর ২৬টি জলযান মাইনের আঘাতে ডুবিয়ে দেয় বাংলার নৌ-কমান্ডোরা। এর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্যই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হবে।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, ‘অপারেশন জ্যাকপট’ গ্রন্থের লেখক মো. শাহজাহান কবির বীর প্রতীকসহ নৌ-কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান